আমাদের চারপাশে অনেক আজব ও অদ্ভুত ঘটনা হরহামেশাই ঘটে। সময় সুযোগের অভাবে কিংবা আমাদের অবাক হবার ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাবার কারণে কিনা জানি না, এসব অদ্ভুত ঘটনা আমাদের অদ্ভুত মনে হয় না। কিছুদিন আগে এক রাতে তেমনি একটা অদ্ভুত কথা আমাকে শুনতে হলো। ঘটনাটা একটু শুরু থেকেই বলি, আমাদের বাসায় কাজ করে যে বুয়া উনি আমাদের যে দারোয়ান সেই মহাশয়ের স্ত্রী।। কদিন ধরে বুয়া বাসায় কাজে আসছে না কারণ বুয়া অসুস্থ, ব্যাপারটা ধারাবাহিকভাবে চললো কিছুদিন। হঠাৎ এক রাতে দেখি আমাদের বুয়ার স্বামী অর্থাৎ আমাদের দারোয়ান জামা-প্যান্ট পরেবাসায় হাজির। কত রাত হবে? এই দশটা সাড়ে দশটা। আমি কিঞ্চিৎ অবাক কারণ তাকে কখনো এই সাজ পোশাকে দেখিনি-লুঙ্গি আর স্যান্ডো গেঞ্জি হচ্ছে তার একমাত্র পোশাক।
কী ব্যাপার? কোথাও যাচ্ছ নাকি? আমি জিজ্ঞেস করলাম। উত্তরে জানতে পারলাম সে যাচ্ছে দেশের বাড়ি। তার অসুস্থ বৌয়ের চিকিৎসা করতে। আজব ব্যাপারটা হলো এদ্দিন শুনে এসেছি মানুষ চিকিৎসার জন্য শহরে আসে আর সে অসুস্থ বৌয়ের চিকিৎসার জন্য যাচ্ছে গ্রামে!
বুয়া তো গেল গ্রামে চিকিৎসার জন্য আর আমাদের শুরু হলো বুয়া সংক্রান্ত জটিলতা। শহুরে জীবনে কাজের বুয়া না থাকলে যা হয় আরকি! বুয়া সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগলাম আমরা বেশ কিছুদিন-আমরা বলতে আমি আর আমার স্ত্রী, দুজনেই সারাক্ষণ ব্যস্ত, অফিস আর অন্যান্য কাজ-কর্ম নিয়ে। তো এই জটিলতা যখন চরমে পৌঁছাল আমি পাশের বাসার এক দারোয়ানকে বললাম আমাকে একটা বুয়া যেন দেখে দেয়।
দুই
রাত দশটা নাগাদ হবে। আমি বাহির থেকে ফিরে অলস বসে টিভির রিমোট ঘোরাচ্ছিলাম এক চ্যানেল থেকে অন্য চ্যানেল। কলিংবেলের শব্দে কানটা খানিক খাড়া করলাম। দরজা খুললো আমার স্ত্রী। কথোপকথন। ওপর তলার মহিলারা আসে মাঝে মাঝে তাদের কেউ হবে হয়ত। আমার স্ত্রী ঘরে এসে বললো পাশের বাড়ির দারোয়ান একটা বুয়া নিয়ে এসেছিল। কাল সকাল থেকে কাজ শুরু করবে।
তিন
সকাল বেলা কলিংবেলের তীক্ষ্ণ সেই সাথে ভোঁতা শব্দে ঘুম ভাঙলো। দরজা খুলতে দেখলাম এক মধ্যবয়স্ক মহিলা খানিকটা জবুথবু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই বয়সের মহিলা দেখলে স্বাভাবিকভাবে আমাদের যে ডাকটা চলে আসে তা হলো খালা।
কাকে চাই খালা? আমি জানতে চাইলাম ঘুম জড়িত কণ্ঠে।
উত্তরে তিনি অদ্ভুত কিছু শব্দ করলেন। তিনি যে কথা বলছেন বা আমার প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন এইটা বুঝতে আমার বেশ খানিকটা সময় লাগলো কারণ ওনার কথা পরিষ্কার না, জড়ানো। কথায় সিলেটের টান পরিষ্কার। বেশ খানিকক্ষণ পর বুঝলাম উনি নতুন বুয়া। গতকাল রাতে পাশের বাড়ির দারোয়ান উনাকেই নিয়ে এসেছিলেন। মধ্যবয়স্ক মহিলা। বয়স পঞ্চাশের বেশি। হালকা পাতলা গড়ন। এই বয়সী এই ধরনের মানুষেরা সাধারণত শাড়ি পড়েন কিন্তু উনি পড়ে আছেন সালোয়ার কামিজ। চোখ দুইটা চঞ্চল, খানিকটা ইতস্তত।
এইভাবে খালার আমাদের গৃহে প্রবেশ। খালা কাজ শুরু করলেন। কাজের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক এবং সৎ। কোনো কাজ যদি ঠিক না হয় তাহলে তিনি বলবেন, তোমরা শিখিয়ে দাও আমি করে নিবো। খালা প্রতিদিন আসতে শুরু করলেন। দু-একদিন যাবার পর খালার মধ্যে কিছু অদ্ভুত ব্যাপার লক্ষ করলাম। উনি কথা বলেন। কথা তো আমাদের সাথে বলেন,যার অনেকটাই আমরা বুঝতে পারি না, তবে এ কথা ঠিক আমাদের সাথে নয়। যখন ঘরে কেউ থাকে না উনি ফিসফিস করে কথা বলতে থাকেনÑযেন উনার সামনে কেউ বসে আছে উনি তার সাথেই কথা বলেন। কিন্তু সেই ফিসফিস করে কথা বলা মানুষটার কোনো অস্তিত্ব নাই। তিনি যখন ফিসফিস করে কথা বলেন তখন কারো উপস্থিতি টের পেলেই চুপ হয়ে যান। আমি বেশ কিছুদিন ব্যাপারটা লক্ষ্য করলাম। ভাবলাম নিজের মনেই হয়তো কথা বলেন, আর কারো উপস্থিতি টের পেলে অপ্রস্তুত হয়ে চুপ করে যান।
আমার স্ত্রীকে বললামও একদিন। আচ্ছা তুমি কি খেয়াল করেছো খালা একা একা কথা বলেন।
হ্যাঁ খালা একটু পাগল আছেন, তবে মন ভালোÑকাজের ব্যাপারেও খুব আন্তরিক।
আমার মনে খটকা রয়েই গেল। খালা যখন কথা বলেন ঠিক পাগলামি মনে হয় না। উনি ফিসফিস করে এমনভাবে কথা বলেন যেন ওনার পাশে কেউ একজন আছে। সে তার কথা শুনছে, উত্তর দিচ্ছে। ঠিক যেন কথোপকথন। কখনো হাসছে, কখনো বিরক্ত হচ্ছে। কিন্তু যার সাথে কথা হচ্ছে সে অদৃশ্য!
চার
সকালে আমি আর স্ত্রী নাস্তার টেবিলে। রুটি, ডিম আর আলু ভাজি এই হলো সকালের নাস্তা। সাধারণ এই নাস্তায় অসাধারণ হলো রুটি। রুটি যে দেখবার মতো সুন্দর হয় তা এই রুটি দেখে মনে হলো। আমি বেশ খানিকটা সময় রুটির দিকে তাকিয়ে রইলাম আর ভয়ে ভয়ে স্ত্রীকে জিজ্ঞস করেই ফেললাম রুটি কে বানিয়েছে?
স্ত্রী উত্তর দিলো-খালা।
কিন্তু সকালে ওদের কথাবার্তায় মনে হচ্ছিল না খালা রুটি বানাতে জানে। তাকে রুটি বানাতে বলে খালা বেশ খানিকটা ভয়ও পেয়েছিল বলে মনে হয়। আমার স্ত্রী খালাকে একবার বুঝিয়ে দিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ল অফিস যাবার প্রস্তুতি নিয়ে। আমি দূর হতে খালাকে একবার লক্ষও করলাম-তিনি রুটি বানাবার জিনিসপত্র যেভাবে নিয়ে বসে আছেন তাতে মনে হলো না তিনি এই কাজটা করতে পারেন। তবে খালার বসে থাকার মধ্যে একটা ব্যাপার ছিল, মনে হচ্ছিল সে কারো জন্য অপেক্ষা করছে। কারো কাছ থেকে সাহায্য চাইছে-খালা নিজের মনে কথা বলে ব্যাপারটা আমাদের জানা, তাই খুব একটা অবাক হলাম না। ব্যস্ত হয়ে পড়লাম নিজের কাজে আর মনে মনে ভাবলাম আজকে আর নাস্তা করে অফিস যাওয়া হবে না। কিন্তু অবাক করার ঘটনা হলো এর পরপরই মনে হয় পাঁচ মিনিটও হয় নাই ডাক পড়লো নাস্তার টেবিলে। টেবিলে গিয়ে আমার অবাক হবার পালা। রুটি অদ্ভুত সুন্দর! মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যে খালা এত সুন্দর করে এতগুলি রুটি বানিয়ে ফেলল! খচখচ করতে লাগল মন। স্ত্রীর সাথে আলাপ করবো ভাবছিলাম এই বিষয়ে পরে এই চিন্তা বাদ দিলাম বেচারা শুধু শুধু ঘাবড়ে যাবে। আর আজকাল কাজের মানুষ খুঁজে পাওয়াও কঠিন বিষয়।
পাঁচ
সেদিন সকালে আমার ও আমার স্ত্রী দুজনেরই অফিস যাবার তাড়া। ওর কী একটা মিটিং আছে আর আমার একটা মিটিং আছে ঠিক সকাল দশটায়। ঢাকা শহরে দেড় দু-ঘণ্টা আগে বের না হলে ঠিক সময়ে গন্তব্যে পৌঁছানো যায় না। তাড়াহুড়ার চূড়ান্ত, কিন্তু সেদিন খালা তখনও এসে পৌঁছায়নিÑযখন আমরা প্রায় বেরিয়ে যাবো তখন খালা এসে উপস্থিত।
খালা তুমি দেরি করে ফেলেছ। আমার স্ত্রী বলল।
আমরা এখন বেরিয়ে যাব। বাসা থেকে বেরিয়ে পড়লাম আমরা, আমাদের পেছন পেছন খালা ও। সেদিন রাতে আমার ফিরতে ফিরতে বাজলো আটটা, স্ত্রী এখনো ফেরেনি তার আরো দেরি হবে। ঘরে কেউ নাই। আমি ফিরে ফ্রেশ হয়ে এক কাপ চা নিয়ে নিজের কাজের টেবিলে বসলাম ল্যাপটপ নিয়ে। বেশ মন দিয়ে চায়েরকাপে চুমুক দিতে দিতে নিজের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম আমি। হঠাৎ পিছনে একটা শব্দ পেয়ে ঘুরে তাকিয়ে দেখি খালা এক হাত এ ঝাড়– নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
খালা আপনি এই সময়ে!
খালার উত্তর-সকালে তো কাজ করতে পারি নাই তাই এখন এসেছি কিছু কাজ করে দিতে।
কিন্তু খালা ঘরে ঢুকলো কি করে? কলিংবেলের কোনো শব্দ তো পাই নাই। দরজা খুললে আমাকেই খুলে দিতে হতো। আমি তো দরজা খুলে দেই নাই। তাহলে কি দরজা খোলা ছিল? তা তো হবার কথা না-দরজা আমি খুব ভালো করে লাগিয়েছিলাম আমার পরিষ্কার মনে আছে। খালাকে জিজ্ঞেস করলাম-খালা দরজা তো বন্ধ ছিল আপনি ঘরে ঢুকলেন কি করে?
খালা কোনো উত্তর দিলো না। আমার দিকে তাকিয়ে অদ্ভুতভাবে হাসলো। এমন অদ্ভুত হাসির মানে কি?
খালা এরকমই অদ্ভুত। তবে যত্নের সাথে কাজ করে তাই আমরা এইটা মেনে নিয়েছি। ধীরে
ধীরে জানতে পারলাম খালার দুই ছেলে, স্কুলপড়ুয়া। তিনটা মেয়েও আছে, বড় দুইটার বিয়ে দিয়েছেন আর একটা আছে। স্বামী নেই, ছেলেরা যখন খুব ছোট তখন মারা যান। তারপর থেকে ছেলে-মেয়েদের দেখাশোনা করার দায়িত্ব তার। তাই ঢাকায় এসেছেন ছেলে-মেয়েদের নিয়ে একটু ভালো থাকবার জন্য। খালার আচরণ নিয়ে মাঝে মাঝে ধাক্কা খাই কিন্তু তার কাজ নিয়ে আমরা বেশ সন্তুষ্ট। আমার স্ত্রী এটা ঐটা টুকটাক খালাকে দিয়েই থাকে। যখনি তাকে কিছু দেয়া হয় তার মধ্যে একটা খুশির ঝিলিক দেখা যায়। তার চোখ চলে যায় অনেক দূরে আর মুখে সেই অদ্ভুত রহস্যময় হাসি। মাঝে মাঝে হাসিটা অস্বস্তিকর লাগে।
এর মধ্যে একদিন পুরোনো বাতিল জিনিসপত্র যেখানে যা ছিল তা ঘর থেকে বিদায় করবার মহাযুদ্ধ শুরু হলো। ঘরে ইঁদুরের উৎপাত শুরু হয়েছে তাই পুরোনো জিনিস বাতিল করে ঘর পরিষ্কার করবার এই উদ্যোগ। এই কর্মযজ্ঞে বের হয়ে আসল আমার অনেক নতুন পুরাতন জামা কাপড় যা আর ব্যবহার করা হয়ে উঠে না। বাতিল জুতা। আরো নানা সব জিনিসপত্র। খালাকে বলা হলো যদি সে চায় এখন থেকে কিছু জিনিসপত্র তার ছেলে মেয়েদের জন্য নিয়ে যেতে পারে। সে খুব আগ্রহের সাথে পুরোনো জামা-কাপড়, জুতা বেছে বেছে নিলো।
এই ঘটনার দু-একদিন পর থেকেই হঠাৎ করে খালার কোনো খবর নেই। এক দিন যায়, দুদিন যায়, তিন দিন যায়-খালার কোনো খবরই নাই। খালা বেমালুম লাপাত্তা। একটা খোঁজ নেয়া প্রয়োজন। প্রথমেই খোঁজ করলাম দারোয়ানকে যে খালাকে জোগাড় করে দিয়েছিল। তাকে খালার কথা জিজ্ঞেস করতেই সে এমনভাবে আমার দিকে তাকালো যে, নিজের মস্তিষ্কের সুস্থতা নিয়ে আমার নিজেরই সন্দেহ হলো। তাকে আবার জিজ্ঞেস করলাম।
আমাদের বাসায় কাজের যে খালাকে ঠিক করে দিয়েছিলে সে বেশ কিছুদিন ধরে আসছে না. তুমি জান কিছু, ওনার কি হয়েছে?
কামের মানুষ! খালা কোইত্তে পাইলেন! আপনার লাগি যে কামের মানুষ আনসিলাম হেই তো বাড়ি গেসে গিয়া। হের মাইয়া হেরে কামে দিতো না, তাই আসবোনা তো কইসে তহনই। আপনারা আর কিসু কন নাই তাই মুইও আর কাম এর মানুষ বিসরাই নাই।
আমি একটু ধাক্কা মত খেলাম। তাহলে আমার বাসায় যে খালা এতদিন কাজ করতে আসতো সে কে!
আমি আবার দারোয়ানকে বললাম, কিন্তু আমার বাসায় তো প্রতিদিন একটা খালা কাজ করতে আসত।
ভাইজান আপনার মনে হয় রাইতে ভালা ঘুম অয়নাই। বাসাত গিয়া ভালা করি ঘুমান।
আমি গভীর চিন্তায় পড়ে বাসায় ফিরলাম, স্ত্রীকে জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা ওই রাতে দারোয়ান কি ওই খালাকেই নিয়ে এসেছিল? সে আমার দিকে এমনভাবে তাকালো যেন আমি উন্মাদের মতো কথা বলছি।
খালাই তো হবে! আমার খুব ঘুম পাচ্ছিল-ঘুম ঘুম চোখে কথা বলেছি, আমার অত ভালো মনে নাই। আচ্ছা তুমি এমন অদ্ভুত কথা জিজ্ঞেস করছো কেন বোলো তো?
আমি ওকে কিছু না বলে সোজা বেরিয়ে গেলাম বাসা থেকে। পুরো ব্যাপারটা গোলমেলে। কিছুতেই কিছু মিলছে না। রহস্যময়। এর সমাধান আমাকে করতে হবে . আমাদের বাসা থেকে দুই রাস্তা পর একটা বস্তি আছে, খালা একবার আমাকে বলছিল তার ছেলেরা ঐ বস্তিতে থাকে। তার মানে ওখানে গেলে একটা কিছু খোঁজ পাওয়া যাবে। খুঁজে পেতে বের করলাম সেই বস্তি। কিন্তু এখানে খালাকে কি করে খুঁজে পাই? বুক ভরে দম নিয়ে বস্তির সামনের একটা টি-স্টল আছে ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। যে লোকটা চা বানাচ্ছে তাকে খালার বর্ণনা দিয়ে জানতে চাইলাম এমন কেউ এই বস্তিতে থাকে কি না? সে আবার জানতে চাইল দেখতে কেমন? আমি আবার খালার বর্ণনা দিলাম তাকে, বেশ গুছিয়ে। উত্তরে সে যা বলল তাতে আমার রক্ত হিম হয়ে যাবার অবস্থা। তার কথামতো এমন একজন মহিলা এই বস্তিতে থাকতেন। তবে বছর দুই আগে এক রোড অ্যাক্সিডেন্টে সে মারা যায় তার দুই ছেলে আর তিন মেয়েকে রেখে। তার ছেলে-মেয়েরা এখনো এই বস্তিতেই থাকে। হটাৎ সেই চা ওয়ালা পনেরো ষোলো বছরের এক ছেলেকে দেখিয়ে দিয়ে বলল-ঐ তো তার ছেলে, আপনি কথা বলেন। আমি খানিকটা ভীত, খানিকটা ঘোরলাগা চোখে এগিয়ে গেলাম ছেলেটার দিকে। কাছে গিয়ে আমি খেলাম আরো বড় ধাক্কা-ছেলেটার গায়ে আমার পুরোনো একটা শার্ট আর আমারই পুরোনো জুতা। এ যে আমার শার্ট আর জুতা তা চিনতে আমার একটুও অসুবিধা হলো না। আমি একটু দম নিয়ে, গলায় খানিকটা শক্তি যোগাড় করে আমতা আমতা করে জানতে চাইলাম, এই জুতা আর শার্ট তুমি কোথায় পেয়েছো?
ছেলেটা উত্তরে কিছুই বলল না। শুধু আমার দিকে তাকিয়ে হাসল। অদ্ভুত রহস্যময় হাসি। কোথায় যেন ঠিক খালার হাসির মতোই।
আবু সাকিব / সাপ্তাহিক সময়ের বিবর্তন