দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা নির্বাচনে ফাঁকা কেন্দ্রের ছবি ছেপেছে প্রায় সব পত্রিকাই। কিন্তু ডেইলি স্টারের দ্বিতীয় পাতায় প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, পাবনার চাটমোহর উপজেলার অমৃত কুণ্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভেতরে ভোট গ্রহণের দায়িত্ব নিয়োজিত ব্যক্তিরা অলস বসে আছেন। মাঠে কোনো ভোটার নেই, যদিও দড়ি দিয়ে যে ভোটারদের লাইন চিহ্নিত করা হয়েছিল, সেই দড়িগুলোও আছে। দুটি ফাঁকা টুলের পাশে একটি ছাগল দাঁড়িয়ে আছে। ছাগলটির গায়ের রং কালো। যে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের আসার কথা, সেই ভোটকেন্দ্রে ছাগল এল কীভাবে? এখানে তার কী কাজ?
একই দিন প্রথম আলোর তৃতীয় পাতায় বগুড়ার পিটিআই ভোটকেন্দ্রের আরেকটি ছবি ছাপা হয়েছে—দুপুরবেলা যেখানে ভোটকেন্দ্রে কোনো ভোটার ছিলেন না। একজন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা টেবিলের ওপর মাথা রেখে অলস সময় কাটাচ্ছেন। তাঁর পাশের স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সটিও তখন বিশ্রাম নিচ্ছিল। ছবি মিথ্যা কথা বলে না।
যেসব প্রার্থী উপজেলায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের নির্বাচিত বলবেন না বাছাইকৃত বলবেন, তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছেন। এর আগে তিনি বলেছিলেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও উপজেলা নির্বাচনে জৌলুশ নেই। কেন জৌলুশ নেই? বিএনপিসহ অনেক বিরোধী দলই নির্বাচন বর্জন করেছে। যারা বর্জন করেনি, তাদের মধ্যে ছোট ছোট দলের অবস্থা যে কতটা শোচনীয়, তার পক্ষে কিছু তথ্য তুলে ধরেছেন রাশেদ খান মেনন প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে। তিনি জাতীয় সংসদের সাংসদ, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং মহাজোট সরকারের সাবেক মন্ত্রী। মহাজোটের শরিক দলের প্রধান যখন বলেন, বাক্স্বাধীনতা ঝুঁকিতে আছে, তখন অন্যদের বাক্স্বাধীনতা কী অবস্থায় আছে, তা অনুমান করা কঠিন নয়।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা ইভিএমের মাধ্যমে রাতে ব্যালট পেপারে সিল মারার সংস্কৃতি বন্ধ করার ইঙ্গিত দিয়ে চুপ মেরে গেছেন। ভোট নিয়ে এখন আর কথা বলেন না। মানুষকে আর কত অসত্য বয়ান করা যায়? মানুষ দেখছে, ভোটকেন্দ্রের এক চেহারা, নির্বাচন কমিশন রাতে খবর দিচ্ছে অন্য রকম। তিনি আগে বলেছিলেন, বিরোধী দলকে নির্বাচনে আনার দায়িত্ব ইসির (নির্বাচন কমিশনের) নয়। এখন বলছেন, প্রধান বিরোধী দলের অংশ না নেওয়ায় উপজেলা নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি কম। কিন্তু বিরোধী দল কেন নির্বাচনে আসেনি, তার ব্যাখ্যা নেই।