পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় ফয়সালাবাদ শহরে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ১৬ আগস্ট গির্জায় হামলা চালানো হয়েছে। স্যোশাল মিডিয়ার বদৌলতে দেখা গেছে, একদল উগ্রবাদী যুবক গির্জায় অগ্নিসংযোগ, পবিত্র ধর্মীয়গ্রন্থসমূহ বিনষ্ট, আসবাবপত্র ভাঙচুর ও গির্জার চূড়ায় অবস্থিত ক্রুশ ভেঙে নিচে ফেলে চুরমার করেছে। একের পর এক গির্জায় আক্রমণ চালানো হয়েছে, দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা চলে সহিংস তাণ্ডব। এলাকার খ্রিষ্টানুসারীরা প্রাণের ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজ করেছে। পুলিশ বলছে, পবিত্র কোরআনের কিছু পৃষ্ঠায় লাল কালিতে অবমাননাকর বক্তব্য লেখা হয়েছে। পাঞ্জাবের জারনওয়ালায় ধর্ম অবমাননার অভিযোগে পুলিশ দুই খ্রিষ্টান যুবককে গ্রেপ্তার করার পরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, আক্রান্ত হতে থাকে চার্চ ও খ্রিষ্টান অধ্যুষিত এলাকাগুলি। পাকিস্তানের অন্যতম বৃহত্তম শহর ফয়সালাবাদ জেলার জারানওয়ালা এলাকায় সিনেমা চক এলাকায় দুই খ্রিষ্টান পরিবারের বসবাস। তথ্যানুযায়ী, ঘটনার দিন ঠিক সেখানেই কোরআনের কয়েকটি পাতা পোড়া অবস্থায় পড়ে ছিল। স্থানীয় কয়েকজন সেটি দেখার পরপরই শহরজুড়ে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে এবং উত্তেজিত জনতা সংগঠিত হয়ে চার্চ ও খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা চালায়। শুরুর দিকে সাদামাটা থাকলেও ঘটনাস্থলে তেহরিক-ই লাব্বাইক পাকিস্তানের সদস্যরা পৌঁছালে পরিস্থিতি বিপজ্জনক মোড় নেয়। তারা আশপাশের মসজিদ থেকে সাধারণ জনতাকে সংগঠিত করে এবং বাড়ি দুটিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। অতঃপর লোকজনের সমাগত বাড়তে থাকলে কয়েক’শ লোক মিলিয়ে ক্যাথলিক চার্চ, স্যালভেশন আর্মির চার্চসহ সবচার্চগুলোতে অগ্নি সংযোগ করে। অপরদিকে আধা-সামরিক বাহিনী ও পুলিশ সদস্যদের তৎপরতায় শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে খ্রিষ্টানদের ৮০টিরও বেশি বাড়ি ও ১৯টি গির্জা ভাঙচুর কর হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তার নিশ্চিত করেছেন। তবে পাঞ্জাব পুলিশ প্রধান উসমান আনোয়ার বলেছেন, ‘যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তা দুঃখজনক। এ ধরনের সহিংসতা কখনোই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না।’ আরো বলেছেন, ‘নির্যাতনের অভিযোগ এড়াতে কোরআন অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত দুই খ্রিষ্টানকে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন। পুলিশের তৎপরতাই তা-বের সঙ্গে যুক্ত ১২৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। একদিকে যেমন ধর্মগুরুরা প্রতিবাদের আগুন লেলিহানে পরিণত করেছেন, অপরদিকে মুসলিম প্রতিবেশীরা ভালোবাসা দেখিয়ে আশ্রয় দিয়েছেন। খ্রিষ্টানদের হামলার শিকার হওয়া থেকে বাঁচাতে তাদের বাড়ির দরজায় কোরআনের আয়াত লাগিয়ে দিয়েছিল। দেশটির খ্রিষ্টান সম্প্রদায় হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধনের আয়োজন করে। করাচির আর্চবিশপ বেনি ট্র্যাভিস বলেছেন, ‘আমরা আশা করি এই প্রতিবাদের মাধ্যমে সরকারকে অবশ্যই বুঝতে হবে, এই সমস্যাটি কঠোরভাবে মোকাবেলা করতে হবে এবং যারা ধ্বংস করেছে তাদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
প্রতিবাদ সভায় অভিযোগ উত্থাপন করেছেন, পাকিস্তানে বসবাসরত খ্রিষ্টানরা সমাজের সর্বনিম্ন স্তরের অন্তর্গত এবং প্রায়শঃই ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগের কারণে লক্ষ্যবস্তু হয়। উল্লেখ্য যে, পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যার প্রায় দুই শতাংশ খ্রিষ্ট বিশ্বাসী রয়েছে। বক্তব্যে উঠে এসেছে, বিভিন্ন সময় একই কায়দায় অর্থাৎ ধর্ম অবমাননার অভিযোগে হিন্দুদের উপর হামলা, মন্দিরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা লক্ষণীয়। এবার একই অভিযোগে পাককট্টরপন্থী মুসলিম গোষ্ঠীগুলি খ্রিষ্টানদের নিশানা করেছে। খ্রিষ্টান ও হিন্দু সম্পত্তি বেহাত করার জন্য পাকিস্তান রাষ্ট্র মুসলিমদের উসকানি দিয়ে রেখেছে তাদের ইসলামী আইনে। জেনারেল জিয়াউল হক ১৯৭৮ সালে পাকিস্তানের মুসলমানদের শরীয়া আইনের আওতায় নিয়ে আসে। এই শরীয়া আইন খ্রিষ্টান এবং হিন্দুদের উপরও কথিত নবী অবমাননায় প্রয়োগ হয়। পাকিস্তান থেকে খ্রিষ্টান-হিন্দুদের সংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করেছে।
পাকিস্তানে ব্লাসফেমী আইন অনুযায়ী, ধর্ম অবমাননার দায়ে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, তবে বিচারিক আদালতে এ পর্যন্ত কাউকেই এ শাস্তি দেওয়া হয়নি। তবে বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে গলধোলায়ে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ধর্ম অবমাননা সংক্রান্ত আইন সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়ার এক প্রাদেশিক গভর্নর ও এক মন্ত্রীকে গুলি করে হত্যার ঘটনাও ঘটেছে। এ বছর একজন চীনা নাগরিক ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তারের সম্মুখীন হয়েছিলেন। তিনি পাকিস্তানের সবচেয়ে বড়ো পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজে যুক্ত ছিলেন, যেটি খাইবারপাখতুনখোয়া প্রদেশে দাসু বাঁধ অবস্থিত। চীনা নাগরিক তিয়ান রোজা চলাকালীন মন্তব্য করছিলেন, ‘রোজা রাখায় কাজের গতি ধীর হয়’। অতঃপর তার বিরুদ্ধে জনসাধারণ গ্রেপ্তারের দাবি জানালে পুলিশ তার বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মামলা হয়েছে, সেই কাগজ দেখানোর পর শ্রমিকরা শান্ত হয়েছিলেন। পরবর্তীকালে সেনাবাহিনীর বিশেষ হেলিকপ্টারে তাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে ফেলা হয়। ২০২১ সালে হজরত মুহাম্মদ (সা.) -এর ছবি সংবলিত একটি পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগে শ্রীলঙ্কার একটি ফ্যাক্টরি ম্যানেজারকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছিল জনগণ। ধর্ম অবমাননা হলো গভীর রক্ষণশীল, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পাকিস্তানে একটি উসকানিমূলক অভিযোগ, যেখানে ইসলাম ধর্ম ও নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কে অপমান করার অপ্রমাণিত অভিযোগও সতর্ককারীদের হাতে মৃত্যুকে উসকে দিতে পারে। ধর্ম অবমাননার অভিযোগে দেশটিতে রাজনীতিবিদ, আইনজীবী, ছাত্রদের পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মানবাধিকার কর্মীরা মনে করেন, ব্যক্তিগত বিবাদ মেটাতে এবং সংখ্যালঘুদের ভয় দেখাতে ব্লাসফেমি আইনের আশ্রয় নেওয়া হয়ে থাকে। পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন বলেছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে হামলার সংখ্যা এবং আকার বেড়েছে বলে মনে হচ্ছে।
উপমহাদেশের দেশ নেপালে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও ১৫ শতাংশ বৌদ্ধ ও ৭ শতাংশ মুসলিম জনগোষ্ঠী বসবাস করে। ধর্মনিরপেক্ষ নেপাল থেকে সংখ্যালঘু বৌদ্ধ বা মুসলিমদের দেশান্তরিতের কোনো রেকর্ড নেই। শ্রীলঙ্কা বৌদ্ধ দেশ বলে পরিচয় দেয় না, নেই রাষ্ট্রধর্ম। ধর্মীয় পরিচয়ে এখান থেকেও কোনো নাগরিক পার্শ্ববর্তী দেশে গমন করেছে বলে জানা নেই। ভুটানের পরিস্থিতি একইরূপ, ৯০ শতাংশ বৌদ্ধদের হামলা-নির্যাতনে, মামলায় অবৌদ্ধ দেশে ছেড়েছে এমন নজির সৃষ্টি হয়নি। ভারত পৃথিবীর অন্যতম গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে বিবেচিত, দুনিয়ার প্রায় সব ধর্মের মানুষই এখানে পাওয়া যায়। ধর্মনিরপেক্ষ ভারত থেকে নির্যাতিত হয়ে পার্শ্ববর্তী পাকিস্তান, বাংলাদেশে অভিবাসীর কোনো প্রামাণ্য দলিল জানা নেই। তবে উপমহাদেশের মুসলিম দেশগুলো যেমন বাংলাদেশ, পাকিস্তান থেকে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের দেশছাড়ার গ্রাফটা খুবই হতাশা ও লজ্জাজনক। ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে চিহ্নিত হলেও ইসরাইল ১৮.১ শতাংশ মুসলিম নাগরিক মসজিদে মাইকে আজান দেন, সাম্প্রদায়িকতার অজুহাতে দেশ ত্যাগ করতে হয় না। অপরদিকে সৌদি আরবে অমুসলিমদের কোনো নাগরিকত্ব নেই। ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্ম চর্চা নিষিদ্ধ। মসজিদ ছাড়া আর কোনো ধর্মালয় নির্মাণ করার অনুমতি নেই। শিয়া মুসলমানদের দেশ ইরান একদা জরথ্রুস্ত ধর্মাবলম্বী পার্সিদের দেশ হলেও ইসলাম গ্রহণ করার পর ইহুদী-খ্রিষ্টান-জরথ্রুস্ত নিঃশেষ হয়েছে। মিশরে আহলে কিবাতী অর্থাৎ ইহুদী-খ্রিষ্টান ধর্ম ছাড়া বৌদ্ধ হিন্দুদের নাগরিকত্ব দেওয়া হয় না। মিশরের ১০ ভাগ খ্রিষ্টানদের সাংবিধানিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া, গির্জা নির্মাণে শর্তারোপ, রোজাকালীন খাবার ইত্যাদি বিষয়ে খুবই অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়। জাপান, কোরিয়া, চীন বৌদ্ধরাষ্ট্র; ইংল্যান্ড, আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানসহ পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো খ্রিষ্টান হলেও ধর্মীয় শাসনের বিভক্তি নেই। দেশগুলো প্রত্যেকেই সেক্যুলার গণতান্ত্রিক শাসনে পরিচালিত হয়। আফগানিস্তানে বৌদ্ধ মূর্তি যখন কামান দাগিয়ে ধ্বংস করা হয়েছিল, তখন জাপান, কোরিয়া, চীনে কোনো মুসলিমকে নাজেহাল হতে হয়নি। পাকিস্তানে গির্জা পোড়ালে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানিতে কোনো মসজিদ অসম্মানের শিকার হয় না।
সাম্প্রতিককালের ঘটনায় পাকিস্তান সরকারও বেকায়দায় পড়েছে। পাঞ্জাব প্রাদেশিক সরকারের তথ্যমন্ত্রী আমির মির বলেছেন, ‘এটা ছিল সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক একটি নাশকতা। সাধারণ মানুষকে উত্তেজিত করতেই এ ঘটনা ঘটনো হয়েছে।’ পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক বলেছেন, ‘জারানওয়ালার ঘটনায় আমি বাকরুদ্ধ। যারা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার ঘৃণ্য চেষ্টা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ পাকিস্তানে ইসলামি চরমপন্থী গোষ্ঠীর দ্বারা গির্জা পোড়ানোর নিন্দা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিদেশ মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ঘৃণাত্মক এবং চরম শব্দগুলি দেশগুলির মধ্যে সহনশীলতা, সহাবস্থান এবং শান্তির মূল্যবোধের প্রচারের আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার সাথে সাংঘর্ষিক।’ ধর্মীয় প্রতীক এবং পবিত্র জিনিসগুলোকে সম্মান করার এবং কোনো উস্কানিমূলক কাজ এড়ানোর গুরুত্বের ওপরও জোর দিয়েছে। পাকিস্তানে খ্রিষ্টানদের উপর হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন আমেরিকা। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সরকারের বিদেশ দফতরের মুখপাত্র বেদান্ত পটেল বলেছেন, ‘অবিলম্বে পাকিস্তান সরকারকে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে। ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত করতে হবে।’ ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে পাকিস্তানে স্বাধীন মত প্রকাশের কণ্ঠরোধ করা হয়ে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
জারানওয়ালায় হামলার শিকার একটি চার্চের কাছেই বসবাস করতেন খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী ফারুক মাসিহ, তার পেশা ট্রাকে রং করা। ইসা নগরির অন্য অনেকের মতো মাসিহর বাড়িও পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ৪৭ বছর বয়সি মাসিহ বলেন, ‘তারা আমার পুরো বাড়ি সম্পূর্ণ জ্বালিয়ে দিয়েছে। কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। এমনকি বসার মতো একটি চেয়ারও নেই। সব ছাই হয়ে গেছে। আমি, আমার ৩ ভাইসহ পরিবারের মোট ১৯ জন সদস্য বাড়িটিতে থাকতাম। এখন আমরা কী করব, কোথায় যাব কিছুই জানি না। খোদার ওপর ভরসা করা ছাড়া আর কিছুই এখন করার নেই।’ যে দেশেই ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হোক না কেন, সংখ্যালঘুদের কষ্ট সংখ্যালঘু ছাড়া কেউই উপলব্ধি করতে পারে না। মানুষের স্বপ্ন, ভালোবাসা, জীবনের গতি এবং দেশের প্রতি মমত্ববোধ সবকিছুই এক সময় ফিকে হয়ে যায়। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যেকার পারস্পরিক সহিংসতা উপমহাদেশের আকাশ-বাতাসকে কুলষিত করে তুলেছে। এছাড়া যুক্ত হয়েছে, ধর্মীয় উগ্রবাদিতা— উগ্রবাদীরা মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোডা কোনোটাকেই রেহায় দিচ্ছে না। অতীতে আমরা দেখেছি, রাষ্ট্রের সাম্প্রদায়িকতা চরিত্র কিন্তু প্রতিবেশীরা ছিলেন অসাম্প্রদায়িক চরিত্রের। আর এখন উল্টো— প্রতিবেশীরা সহিংসতামূলক আচরণে অভ্যস্ত কিন্তু রাষ্ট্রের চরিত্র অসাম্প্রদায়িক। কয়েক বছর আগে পাকিস্তানের পেশোয়ারের অল সেইন্টস্ গির্জায় রাবিবারিক উপাসনায় দুর্বৃত্তরা হামলা চালালে ৭৮ জন খ্রিষ্ট বিশ্বাসীর মৃত্যু ঘটে। ছয়শতাধিক খ্রিষ্টবিশ্বাসীর উপাসনা উপযোগী গির্জায় হামলা নিন্দা জানিয়েছিলেন পোপ ফ্রান্সিস। প্রার্থনা উৎসর্গ করে বলেছিলেন, ‘এ ঘৃণার সিদ্ধান্ত টিকে থাকতে পারে না। শুধু শান্তির পথই অধিকতর ভালো পৃথিবীর নিশ্চয়তা দিতে পারে।’ উপমহাদেশের মানুষকেও শান্তির পথ খুঁজতে হবে, শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হবে; সম্প্রীতির সৌন্দর্যে পৃথিবী সৌরভমণ্ডিত হোক।
