• প্রচ্ছদ
  • সারাদেশ
  • শিক্ষা
    • পড়াশোনা
    • পরীক্ষা প্রস্তুতি
  • সাহিত্য পাতা
    • গল্প
    • ইতিহাসের পাতা
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা ও ছড়া
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • অন্যান্য
    • বিশ্ব রাজনীতি
    • মতামত
    • বড়দিনের বিশেষ লেখা
  • স্বাস্থ্য
  • বিনোদন
  • ভ্রমণ
  • রেসিপি
  • ধর্ম-দর্শন
  • ফিচার
No Result
View All Result
শনিবার, মার্চ ২৫, ২০২৩
  • প্রচ্ছদ
  • সারাদেশ
  • শিক্ষা
    • পড়াশোনা
    • পরীক্ষা প্রস্তুতি
  • সাহিত্য পাতা
    • গল্প
    • ইতিহাসের পাতা
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা ও ছড়া
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • অন্যান্য
    • বিশ্ব রাজনীতি
    • মতামত
    • বড়দিনের বিশেষ লেখা
  • স্বাস্থ্য
  • বিনোদন
  • ভ্রমণ
  • রেসিপি
  • ধর্ম-দর্শন
  • ফিচার
Somoyer Bibortan
No Result
View All Result

মতামত ► খ্রিষ্টান নারীর প্রশ্ন—আমরা কী পাপ করেছি মেয়র সাব! ● মিথুশিলাক মুরমু

মতামত ► খ্রিষ্টান নারীর প্রশ্ন—আমরা কী পাপ করেছি মেয়র সাব! ● মিথুশিলাক মুরমু

Admin by Admin
ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩
in প্রচ্ছদ, বিশেষ খবর, মতামত
0 0
0
মতামত ► খ্রিষ্টান নারীর প্রশ্ন—আমরা কী পাপ করেছি মেয়র সাব! ● মিথুশিলাক মুরমু
0
SHARES
138
VIEWS
Share on FacebookShare on Twitter

RelatedPosts

একনেক সভা ● বিদেশি পরামর্শক নিয়োগ প্রবণতা কমানোসহ একাধিক নির্দেশনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী

গুলিস্তানে বিস্ফোরণে প্রাণহানীর সংখ্যা বেড়ে ১৫, আহত অন্তত ৭০

পবিত্র শবে বরাত আজ

বিগত ১৭ই ফেব্রুয়ারি ন্যাশনাল খ্রিষ্টিয়ান ফেলোসিপ অফ বাংলাদেশ (এনসিএফবি)-এর সাধারণ সম্পাদক উচ্ছেদকৃত তেলেগু কলোনী পরিদর্শন ও ভুক্তভোগীদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। এ সময় গলগাথা ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ (তেলেগু) চার্চের পালক রেভা. মারিয়া দাস এবং জর্দান চার্চ অব ক্রাইষ্ট তেলেগু’র পালক উপস্থিত ছিলেন। সাধারণ সম্পাদক রেভা. মার্থা দাস ভুক্তভোগীদের সাথে বসেন এবং অব্যক্ত কথাগুলো শ্রবণ করেন। মাত্র দু-একদিনের মধ্যে গুঁড়িয়ে দেওয়া জায়গাগুলো ঘুরে দেখেন। ঘরের মালামাল, আসবাবপত্র সরানোর জন্য সামান্যটুকু সময় দিতে সরকারের লোকজন সহানুভূতি দেখাননি। জানাচ্ছিলেন—আমরা কোথায় যাব! আমাদের যাওয়ার কোনো জায়গা নেই, সিটি কর্পোরেশন যদি আমাদের তাড়িয়ে দেয়, রাস্তায় খোলা আকাশের নিচেই কাটাতে হবে; ঘরবাড়িহীনই একদিন মারা যাব। এখন আমাদের একমাত্র ভরসা স্বর্গের ঈশ্বর, যিনি এই পৃথিবীর মালিক; তাঁর ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপরই নির্ভর করে। অনুরোধ করে বলছিলেন—‘আমাদের জন্য ত্রিভুবনের স্রষ্টা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করবেন, যেন আমাদের জন্য একটি বাসযোগ্য জায়গা, স্থানের সংকুলান হয়।
পাপ-পুণ্যের বিচারক তো স্রষ্টা ঈশ্বর, তাহলে কীসের ভিত্তিতে তেলেগু নারী রামনাম্মা ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসের কাছে আর্জি জানালেন। ওপর থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত না হলে কেউই ক্ষমতা ব্যবহার করতে পারে না, আর এই ‘ওপর’ হচ্ছে ওপরওয়ালা—যিনি স্বর্গে সমাসীন স্রষ্টা ঈশ্বর। যিশু খ্রিষ্টকে ক্রুশোরোপণের পূর্বে শাসক পিলাত যিশুকে বলেছিলেন, ‘তুমি কি জান না যে, তোমাকে ছাড়িয়া দিবার ক্ষমতা আমার আছে, এবং ক্রুশে দিবারও ক্ষমতা আমার আছে? যীশু উত্তর করিলেন, ঊর্ধ্ব হইতে তোমাকে দত্ত না হইত, তবে আমার বিরুদ্ধে তোমার কোন ক্ষমতা থাকিত না’ । যারা পদস্থ ও রাষ্ট্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত তাদের দায়িত্বপ্রাপ্তিতে কোনো না কোনোভাবে ওপরের সৃষ্টিকর্তার হাত রয়েছে। খ্রিষ্ট-অনুসারীদের কাছে ‘রাজাদের ও উচ্চপদস্থ সকলের নিমিত্ত’ নিত্যদিনের প্রার্থনায় স্মরণের আদিষ্টতা রয়েছে। খ্রিষ্ট বিশ্বাসী তেলেগু নারী রামনাম্মা বিগত ১৬ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবে আউটফল তেলেগু কলোনীর ১৩০টি তেলেগু পরিবারকে কলোনী থেকে উচ্ছেদের প্রতিবাদে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়রের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখেছেন। রামনাম্মার প্রশ্ন—দুঃখ, কষ্ট, বেদনা ও হতাশা মিশ্রিত; তিনি শুধু সিটি মেয়রের কাছে নয়, দেশবাসীর বিবেকবানদের কাছে তেলেগুদের পক্ষে প্রতিনিধির বক্তব্যে উঠে এসেছে। তিনি বলেছেন, ‘এক সপ্তাহ ধরে আমাদের ঘুম নেই, খাওয়া নেই। আমরা কী পাপ করেছি মেয়রসাব? আমরা কী অপরাধ করেছি? এই মাটিতে জন্ম কি আমাদের ভুল? আমরা এখন যেখানে বসবাস করছি, আগে সেখানে পা দিলে রক্ত আসত। এই মাটি এখন শক্ত হয়েছে। আর প্রশাসনের চোখে পড়ে গেছে। আমরা কোথায় যাব? আপনারা যদি এই জায়গা নিতে চান, বিষ দিয়ে আমাদের তেলেগু সবাইকে মেরে ফেলেন। তারপরে জায়গা নেন।’ কতোটুকু নিরুপায় হলে স্রষ্টার সৃষ্টি শ্রেষ্ঠজীব মানুষ এরূপ কথা উচ্চারণ করতে পারে! কতটুকু অসহায় হলে বিষ চেয়ে নিজ মৃত্যুর নিশ্চয়তা নিশ্চিত করে! একটি মাত্র কারণ, পুনর্বাসন না করেই উচ্ছেদ, ঘরবাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে খোলা আকাশের নিচে স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি নিয়ে অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাওয়া। রামনাম্মা নিজের ওপরই ক্ষোভে দোষ বর্তিয়েছে, এটি পূর্ব-পুরুষের পাপের শাস্তি হিসেবেই চিহ্নিত করেছেন।
জানা যায়, ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে একটি আন্তর্জাতিক এনজিওর সহযোগিতায় টিকাটুলি থেকে তেলেগুদের সায়েদাবাদ হুজুরবাড়ী এলাকায় স্থানান্তর করা হয়েছিল। পরে হুজুরবাড়ীর জায়গাটি এরশাদ সরকার লিখে দিয়ে ১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দে সরকারিভাবে তাদের ধলপুরে আনা হয়। দীর্ঘ ৩০ বছর অতিক্রান্তের পর ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি মেয়র তেলেগু মাতব্বরদের ডিএসসিসিতে ডেকে নিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার মৌখিক নির্দেশ দেওয়া হয়। অতঃপর ফেব্রুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানার ওসি ও কাউন্সিলর কলোনির মাতব্বরদের থানায় ডেকে পাঠান এবং সিটি কর্পোরেশনের নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে নির্দেশনা দেন। এর বিরুদ্ধে কোনো ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি করা যাবে না বলেও শাসিয়েছেন। এ কথা ছড়িয়ে পড়লে কলোনিজুড়ে উচ্ছেদ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তেলেগু কলোনীর বাসিন্দাদের প্রশ্ন—তারা অন্য জায়গায় ছিলেন। আউটফল এলাকায় তারা গেছেন সরকারের ইচ্ছায়। তারা কি দেশের নাগরিক নন! যখন খুশি তাদের এখানে-ওখানে স্থানান্তর করবেন, মাথা গোঁজার ঠাঁই কেড়ে নেবেন, তাদের নিরাপত্তা, মর্যাদা সম্মান—সবকিছু ভুলুণ্ঠিত হবে, এটা হতে পারে না। ১২ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ওই এলাকায় গড়ে ওঠা অন্তত ১০টি বস্তি উচ্ছেদ করেছে। যাত্রাবাড়ীর ধলপুরে প্রায় ১৫ একর জায়গায় বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে ১৩০টি তেলেগু পরিবার (প্রায় ১ হাজার ৩০০ শত লোক) বসবাস করে আসছে, এদের মধ্যে অর্ধেকই খ্রিষ্টবিশ্বাসী। এছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এই জায়গার মধ্যেই সীমানা প্রাচীরে বেষ্টনী তৈরি করে ‘মুকুল’ ও ‘শিমুল’ নামে দুটি ভবন কয়েক বছর পূর্বে নির্মাণ করেছে, এটির মধ্যেও ১২০টি তেলেগু পরিবার যারা সিটি কর্পোরেশনে কাজ করেন, তারাও আশ্রিত হয়েছেন। মেয়র সাহেব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘কলোনি উচ্ছেদ ও সুইপারদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে। পুনর্বাসন না করে আশাপাশের অন্যান্য অবৈধ স্থাপনা ভেঙে ফেলা হলেও তাদের কলোনি ভাঙা হবে না।’ মাননীয় মেয়র সাহেব, নিজের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন বলছিলো, অন্যত্র থাকার জায়গা তৈরি করেই তেলেগু সম্প্রদায়ের লোকজনকে স্থানান্তর করা হবে। উচ্ছেদকৃত জায়গায় সরকার সিটি কর্পোরেশন কর্মীদের জন্য আবাসন এবং ওয়ার্কশপ তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছে ডিএসসিসি।
বাংলাদেশে দু-ধরনের হরিজন বা দলিত সম্প্রদায় রয়েছে। একদল স্থানীয় দলিত—ঋষি, জেলে, বেদে এবং অন্যরা অভিবাসী দলিত—কানপুরি, মাদ্রাজি, তেলেগু এবং চা শ্রমিক। অস্পৃশ্য সম্প্রদায়কে মহাত্মা গান্ধী ১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে নামকরণ করেছিলেন ‘হরিজন’। হরিজন শব্দটির অর্থ ঈশ্বরের সন্তান। সাধারণত শহর, বন্দর কিংবা গ্রামাঞ্চলে যারা ময়লা-আবর্জনা ও মলমূত্র পরিষ্কারের কাজে নিয়োজিত সেই সকল জনগোষ্ঠীকে হরিজন বলা হয়ে থাকে। হরিজনের আওতায় পড়েছে—চর্মকার, মুচি, ডোম, বাল্মিকী, রবিদাস, ডোমার, মাদিগা, চাকালি, সাচ্চারি, কাপুলু, পরাধন প্রভৃতি জনগোষ্ঠী। আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে—হরিজনদের কাছ থেকে সেবা গ্রহণ করা যাবে কিন্তু তাদের স্পর্শ করা যাবে না। বাংলাদেশে বসবাসকারী হরিজন সম্প্রদায়ের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে সেই সংখ্যা আনুমানিক ৩০ লাখ হবে। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের আদমশুমারীতে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর তালিকায় প্রথম হরিজন নামটি পাওয়া যায়। আর স্বতন্ত্রভাবে তেলেগুদের সংখ্যা আনুমানিক ৫০ হাজারের অধিক হবে। হিন্দি এবং বাংলার পর তেলেগুই ভারতের সর্বোচ্চ ব্যবহৃত ভাষা। তেলেগু ভাষা ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে প্রচলিত ও রাজ্যটির সরকারি ভাষা। এছাড়াও তেলেঙ্গানা, পন্ডিচেরি বা পুদুচেরি অঞ্চলে তেলেগু ভাষার প্রচলন রয়েছে। সারা বিশ্বে প্রায় ৯০ মিলিয়ন মানুষ তেলেগু ভাষায় কথা বলে। হিসাব অনুযায়ী, ভারতে তৃতীয় এবং বিশ্বের ভাষা তালিকায় ১৫তম স্থান দখল করেছে। তেলেগু ভাষার ইতিহাস ও সাহিত্য অন্যান্য ভাষা থেকে বেশ সমৃদ্ধ।
ঢাকার বস্তি উচ্ছেদ মামলায় হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে, পুনর্বাসন ছাড়া কোনো বস্তি বা কলোনি উচ্ছেদ করা যাবে না। কারণ, সংবিধানে জনগণের বাসস্থানের অধিকার রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির অন্তর্ভূক্ত। এখানে বৈধভাবে বসবাসরত পরিচ্ছন্নকর্মীদের উচ্ছেদ হবে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন আহমেদ তেলেগু কলোনী পরিদর্শন করেছেন। তেলেগু কলোনীতে পৌঁছালে নারী-পুরুষেরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। কমিশন চেয়ারম্যানের পায়ে লুটিয়ে পড়ে কান্নজড়িত কণ্ঠে জানিয়েছে, ‘আমাদের যাওয়ার জায়গা নেই। দয়া করে আমাদের এখানে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। এখন পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্রে স্থায়ী-অস্থায়ী ঠিকানা এখানেই। কারও গ্রামের কোনো পরিচিতি নেই। যুগ যুগ ধরে একসঙ্গে বসবাস। আমাদের বাঁচান। আমাদের পাশে কেউ নেই। ১৪ ফেব্রুয়ারি পরিদর্শনের পর প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন, ‘তেলেগু সম্প্রদায়ের লোকদের কোনো ধরনের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করে উচ্ছেদ করা অবশ্যই মানবাধিকারের লঙ্ঘন। আমাদের দেশে সামাজিক নানা কুসংস্কারের কারণে তাদের অন্য কোথাও গিয়ে থাকার উপায় নেই। এই লোকগুলো যাবে কোথায় তাহলে? তারা তো বাংলাদেশের নাগরিক। আমি মনে করি, উচ্ছেদের আগে তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা উচিত। এখানে তাদের ধর্মীয় প্রার্থনাস্থল রয়েছে তিনটি। একটি মন্দির রয়েছে। দুটি গির্জা রয়েছে। একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও হঠাৎ কোনো উদ্যোগ নিলে এ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কী ব্যবস্থা হবে। এগুলো কিন্তু যারা উচ্ছেদ করছেন, তাদের গভীরভাবে চিন্তা করার বিশেষ প্রয়োজন আছে।’ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ তেলেগু কলোনী পরিদর্শন করেছেন, প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখভাগে। নেতৃবৃন্দরা ক্ষোভিত হয়েছেন, বলেছেন ‘এই উচ্ছেদের নির্দেশ বেআইনি, অগণতান্তিক ও স্বেচ্ছাচারমূলক। মানবাধিকার কর্মীরা বার বার তাদের স্থানচ্যুত হবার আশঙ্কায় বলেছেন, ‘বর্তমান পুনর্বাসন স্থায়ীভাবে হতে হবে এবং এ জমির মালিকানার বৈধ কাগজপত্র তাদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।’
১৮৬৪ খ্রিষ্টাব্দে ঢাকা পৌরসভা ঘোষিত হবার পরই ব্রিটিশরা তেলেগুদের নিয়ে এসেছিল। ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা রাজ্য থেকে তাদের পিতৃপুরুষদেরকে এ অঞ্চলে আমদানি করেছিল, মানুষের মল ও ময়লা পরিষ্কারের লক্ষ্যে; জায়গা হয়েছিলো চা-বাগান, পৌরসভা ও রেলওয়েতে। তৎকালীন সময়ে সরকার তাদের জন্যে এলাকায় এলাকায় কলোনী নির্মাণ করে দিয়েছিলেন। প্রজন্মের পর প্রজন্মরা ব্রিটিশ সরকার, পাকিস্তান সরকার এবং বাংলাদেশের ৫০ বছর পার করেছে। ঢাকা শহরের ১৪টি জায়গায় ডাম্পিং ষ্টেশন আছে। তেলেগুদের যেখানে থাকতে দেওয়া হয়েছিল, সেটিও ছিল একটি ডাম্পিং স্টেশন। সেখানে মরা গরু, ছাগল, কো রবানির চামড়া, আবর্জনা—সবকিছু ফেলা হয়। এখন যখন জায়গাটি বসবাসের উপযোগী হয়েছে, তখন এতে চোখ পড়েছে সিটি কর্পোরেশনের। সময়ের ব্যবধানে ‘জাত মেথর’ হিসেবে আখ্যায়িত পেশাকে এখন ‘পরিচ্ছন্নতাকর্মী’তে উন্নীতকরণ করা হয়েছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে এখন জাত-পাতের বাছবিচার নেই; বাঙালিদের দখলে ‘জাত মেথর’ পদটি চলে গেছে। চরম কর্ম সঙ্কটে পড়েছে তেলেগু সম্প্রদায়ের লোকজন, নিরক্ষর ও বৈষম্যের শিকার হয়ে এখন তারা দিশেহারা। পুরুষের পর পুরুষানুক্রমে যারা পরিচ্ছন্নের কাজ করেছে, যাদের দক্ষতা, সহনীয়তা ও মানসিকতা রয়েছে; এ সংক্রান্ত চাকরিতে তাদেরকেই সব সময় অগ্রাধিকার দিতে হবে। কাউকে চাকুরি নেই বলে উচ্ছেদ বা বাস্তুচ্যুত করা যাবে না। আমরা দেখেছি, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ১২১ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। নিয়োগের সব শর্ত ও ধারাবাহিকতা ভেঙে সম্প্রদায়ের বাইরে হিন্দু-মুসলমান মিলিয়ে ১৫০ জনকে নিয়োগ দেয়া হয়। সরকার এই সম্প্রদায়ের জন্য পদগুলোতে ৮০ শতাংশ কোটার বিধান রাখলেও তার যথাযথ প্রয়োগ বা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। দেখা গেছে যে, মুসলমান-হিন্দু যুবরা পরিচ্ছন্নকর্মী পদে নিয়োগ পেয়ে ভাড়াটে কর্মী হিসেবে জাত সুইপারদের নিয়ে অল্প বেতনে কাজ করিয়ে নিচ্ছে যা সরকারি বিধি-বিধানের চরম লঙ্ঘন। একদা মদ ও চুরুট খাইয়ে তাদের দিয়ে ময়লা পরিষ্কারের কাজ করানো হয়। তেলেগুরা সহজ-সরল ছিল বিধায় খাবার দিয়ে তাদের সব কাজ করানো হতে। এদেরকে তখন প্রতিটি জেলা, মহকুমাতে বসবাসের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়। জনসংখ্যা বেড়েছে কিন্তু আবাসনের জায়গা বাড়ে না; বাড়েনি টয়লেট ও গোসলখানার জায়গা। এক বেসরকারি সংস্থার গবেষণায় দেখা গেছে, একজন তেলেগু সকাল থেকে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগ পর্যন্ত ৭২টি সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। তারা বর্ণ বৈষম্যের শিকার হন, জায়গাজমি কিনতে পারেন না, একই পুকুরে গোসল, নলকূপের জল, সামাজিকভাবে তাদের স্পর্শ করাও নিষিদ্ধ। ধর্মীয় কিংবা সামাজিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেই এরা নিতান্তই জাত সুইপার। সর্বশেষ যোগ হয়েছে, উন্নয়ন ও মেগা উন্নয়নের যাতাকলে প্রতিনিয়তই প্রান্তিক জনগোষ্ঠী উচ্ছেদের শিকার হচ্ছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমাদের বিনীত আরজ, যারা সমাজের সবচেয়ে নিচু শ্রেণীর মানুষ, যারা নগরকে, অফিস-আদালত, রাস্তা-ঘাটকে পয়ঃপরিষ্কার করে রাখে; তাদের প্রতি কৃপণতা দেখানো সমীচীন হবে না। তেলেগু জনগোষ্ঠী চেয়েছে পুনর্বাসনের জায়গা, যে জায়গা থেকে আর কেউ-ই তাদের পুনঃপুন বিতাড়িত করতে পারবে না। চেয়েছে স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার, ধর্ম পালন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে বাঁচার আশা; আপনিই পারবেন এই মহানুভবতা দেখাতে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছেন,‘ আমি কী চাই? আমি চাই বাংলার মানুষ পেটভরে ভাত খাক। আমি কী চাই? আমার বাংলার মানুষ সুখী হোক। আমি কী চাই? আমার বাংলার মানুষ হেসে-খেলে বেড়াক। আমি কী চাই? আমার সোনার বাংলার মানুষ আবার প্রাণভরে হাসুক’।
মিথুশিলাক মুরমু : গবেষক ও লেখক।

Previous Post

আজ মহান ভাষাশহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

Next Post

পঞ্চগড়ে আহমদিয়ার সালানা জলসা কেন্দ্রীক সংঘর্ষে আরও একজন নিহত

Admin

Admin

Next Post
পঞ্চগড়ে আহমদিয়ার সালানা জলসা কেন্দ্রীক সংঘর্ষে আরও একজন নিহত

পঞ্চগড়ে আহমদিয়ার সালানা জলসা কেন্দ্রীক সংঘর্ষে আরও একজন নিহত

Leave a Reply Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ADVERTISEMENT

সময়ের বিবর্তন

সম্পাদকঃ
আবদুল মাবুদ চৌধুরী

বিভাগীয় সম্পাদকঃ
নায়েম লিটু

ফোনঃ ০২-৯০১১১৫৬ বাসাঃ -০৪, রোডঃ ০৪, ব্লক- এ, সেকশনঃ ০৬, ঢাকা -১২১৬

Our Visitor

0 0 8 9 3 1
Users Today : 0
Views Today :
Total views : 130374
Powered By WPS Visitor Counter

  • Setup menu at Appearance » Menus and assign menu to Footer Navigation

Developer Lighthouse.

No Result
View All Result
  • প্রচ্ছদ
  • সারাদেশ
  • শিক্ষা
    • পড়াশোনা
    • পরীক্ষা প্রস্তুতি
  • সাহিত্য পাতা
    • গল্প
    • ইতিহাসের পাতা
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা ও ছড়া
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • অন্যান্য
    • বিশ্ব রাজনীতি
    • মতামত
    • বড়দিনের বিশেষ লেখা

Developer Lighthouse.

Login to your account below

Forgotten Password?

Fill the forms bellow to register

All fields are required. Log In

Retrieve your password

Please enter your username or email address to reset your password.

Log In