মো. নজরুল ইসলাম, যশোর প্রতিনিধি ● যশোরের মণিরামপুর উপজেলা গো-খাদ্যের জন্য আগাম কেটে নেওয়া হচ্ছে ধান। এ ধানের গিরা থেকে খুলে পড়া ও আগা শুকিয়ে চিটা পড়া রোগে আক্রান্ত হওয়ায় এ ধান আগাম কেটে নিচ্ছেন কৃষকরা। সঠিক পরামর্শের অভাবেই কৃষকের স্বপ্ন ফিঁকে হয়ে ধানে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। কৃষি অফিস জানিয়েছে, আবহাওয়াজনিত কারণে ছত্রাক অর্থাৎ কারেন্ট পোকার আক্রমণে ধানের ক্ষতি হয়েছে। মনিরামপুর উপজেলার ব্রি-২৮, ব্রি-৬৩ ও রড মিনিকেট জাতের ধানে এ অবস্থা দেখা দিয়েছে। পরামর্শ নিতে বীজ ও কীটনাশক ব্যবসায়ীদের উপর নির্ভর করতে হয়েছে। অবশ্য কৃষি অফিস বলছে, আবহাওয়া জনিতকারণে ছাত্রাকের আক্রমণে এমনটি হয়েছে।
জানাযায়, চলতি বোরো মৌসুমে উপজেলায় ২৮ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে ধানের চাষ হয়েছে। এরমধ্যে দুই হাজার ১৮৬ হেক্টরে ব্রি-২৮ জাতের ধান, তিন হাজার ৪৬ হেক্টরে ব্রি-৬৩ জাতের ধান এবং চার হাজার ৭০৩ হেক্টর জমিতে রড মিনিকেট জাতের ধানের আবাদ হয়েছে।
মনিরামপুর উপজেলার গোপালপুর গ্রামের বাবুল আক্তার ৫ বিঘা জমিতে এবার ব্রি-২৮ জাতের ধানের আবাদ করেন। কিন্তু গিরা খুলে পড়া ও আগায় চিটা পড়া রোগে আক্রান্ত হয়ে এক মুঠো ধান তিনি ঘরে তুলতে পারছেন না। খাটুয়াডাঙ্গা গ্রামের আজগর আলী দেড় বিঘা জমির সম্পূর্ণ ধানে চিটা পড়েছে। এভাবে শহিদুল ইসলাম, হযরত আলী, ইছহাক গাজী, শওকত হোসেন,নাজির হোসেন, সুবজ হোসেনসহ আম্রঝুটা, খাটুয়াডাঙ্গা,নেহালপুর, গোপালপুর,ঘুঘুদহ, বাহিরঘরিয়া অঞ্চলের কৃষকদের মাথায় হাত উঠেছে।
গোটা মনিরামপুর উপজেলায় এ জাতের ধানের যারাই আবাদ করেছেন,তাদের অধিকাংশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
সরেজমিন মণিরামপুর-নেহালপুর সড়ক লাগোয়া একটি মাঠ অপেক্ষাকৃত কাঁচা ধান কাটার দৃশ্য চোখে পড়ে। ধান কাটছেন জনা দশেক শ্রমিক। এগিয়ে যেতেই তারা বললেন,ধানে চিটা পড়ে গেছে। আগায় একটুও ধান নেই। তাই গো-খাদ্যের জন্য জমি মালিক বাবুল আক্তার কাটাচ্ছেন।
এ সময় উপস্থিত বাবুল আক্তার বাকরুদ্ধ কণ্ঠে বলেন, ‘এবার ৫ বিঘা (৪২ শতাংশে এক বিঘা) জমিতে ধানের আবাদ করেছি। কিন্তু এক মুঠো ধানও ঘরে তুলতে পারছি না। আমার ব্যবসার পুঁজি বিনিযোগ করে ধানের চাষ করেছিলাম। কিন্তু সব শেষ হয়ে গেল!’
জানতে চাইলে এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যশোরে অঞ্চলের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ’কিছু এলাকায় ছত্রাকজনিত রোগে ধানের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। সেটা দায়িত্বরত উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে উত্তোরণ ঘটছে। অধিক জমিতে এ রোগের আক্রান্তের খবর আমার জানা নেই।’