এতটাই ভালোবাসি তোমাকে,
যতটা ভালোবাসলে তোমাকে ছাড়া নিজেকে মৃত মনে হয়…
গত ৮ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে ভালুকা থেকে এক প্রিয়জনের টেলিফোন পেলাম। তিনি জানালেন ভালুকা নিয়ে আমার যে ছয়টি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে তার মূল কপি কুরিয়ারে যেন পাঠিয়ে দেই। বিনয়ের সাথে জানালাম প্রতিটি লেখার মাত্র একটি করে মূল কপি আছে, তাই মূল কপি পাঠানো আমার পক্ষে সম্ভব নয়। চিন্তার জগৎ থেকে যখনই ভালুকাকে ভুলে যাওয়ার প্রতিজ্ঞা নিয়ে ফেলি ঠিক তখনই আমার অন্তর জুড়ে থাকা ভালুকা নতুন করে উপস্থিত হয়ে যায়। একজন লেখকের/কবিতায় অনেক ধরনের লেখা-কবিতা প্রকাশিত হবে এটাই স্বাভাবিক, কিন্তু তার লেখায় যখন একাধিকবার একটি উপজেলা প্রবন্ধে ও কবিতায় প্রকাশিত হয় তখন বুঝতে হবে ঐ লেখকের কাছে ঐ উপজেলা তীর্থকেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

ময়মনসিংহের ভালুকা আমায় যা দিয়েছে একজীবনে তার ঋণ আমি পারবো না পরিশোধ করতে। তাই না চাইতেই আমার লেখায়-কবিতায় ভালুকার কথা চলে আসে। ষোল বার ভালুকা সফর করেও এই লেখকের তৃপ্তি মেটেনি। বেশ কয়েক বছর আগেই ভালুকার উথুরায় আমার এক প্রিয়জনকে কথা দিয়েছিলাম, যেখানে তোমার শৈশব-কৈশোর কেটেছে সেই ভালুকার ধুলাবালিকেও আমি ভালোবেসে যাব। গত ৩ নভেম্বর ২০২০ তারিখ ভালুকার উথুরায় গিয়ে কিছু উথুরার মাটি নিয়ে এসেছিলাম, কারণ ঐ উথুরার ধুলাবালিও আমার কাছে সুরমায় পরিণত হয়ে যায়। সেইদিন আমার সফরসঙ্গী ছিলেন ভালুকার প্রিয়মুখ সমাজকর্মী রফিকুল ইসলাম লিটন।
আমার লেখা পড়ে শতশত পর্যটক ইতিমধ্যে ভালুকা সফর করেছেন, ভবিষ্যতেও করবেন। যারা নতুন করে তাদের সফরসূচিতে ভালুকাকে অন্তর্ভুক্ত করতে চান তারা, তাদের সফরসূচিতে, উথুরায় গিয়ে কুমির খামার, মাল্টার বাগান, ড্রাগন ফলের বাগান পরিদর্শন করতে পারেন। এছাড়া পাড়াগাঁওয়ে গিয়ে মোতালেব ভাইয়ের তৈরি করা সৌদি খেজুর বাগান, মল্লিক বাড়ি ব্রিজ, মল্লিক বাড়ি মালাই চায়ের দোকান, ওয়াহেদ টাওয়ারে গিয়ে ডক্টরস ক্যাফে, স্কয়ার মাষ্টার বাড়ি, হবির বাড়ি, মেঘমাটি ভিলেজ রিসোর্ট, তেপান্তর রিসোর্ট, চন্দ্র মল্লিকা হলিডে রিসোর্ট, কাদীগড় জাতীয় উদ্যান, হারলা বিল, মেদিলা, ধলিয়া, বর্তাগ্রাম, খিরুনদী, ভালুকা পাইলট উচ্চবিদ্যালয়, ভালুকা ডিগ্রি কলেজ আপনার সফরসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করবেন।
ঢাকার মহাখালী থেকে এনা পরিবহন সহ একাধিক পরিবহন মাত্র দু’ঘণ্টায় আপনাকে ভালুকায় পৌঁছে দিবে। ভালুকা পৌঁছে পাঁচরাস্তা মোড় থেকে মোটরসাইকেল যোগে পছন্দের দর্শনীয় স্থানে যেতে পারবেন, তবে ভাড়ার বিষয়ে দামাদামী করে নিবেন। ভালুকায় থাকার জন্য ভালো মানের রিসোর্ট ও আবাসিক হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে হোটেল নীরব অন্যতম। একাধিক খাবারের হোটেল পাবেন। বাংলাদেশের একাধিক জেলা ও উপজেলা সফরসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করবেন। কিন্তু এবার না হয় ময়মনসিংহের প্রাণকেন্দ্র চিরসবুজ ভালুকাকে অন্তর্ভুক্ত করুন। এই লেখাটি ভালুকার জনপ্রিয় ড্রোন ভিডিও নির্মিতা প্রিয় অভি মিরাজ, সমাজকর্মী/ভিডিও নির্মাতা রফিকুল ইসলাম লিটন ও খ্যাতিমান ফটোগ্রাফার মো. জাহিদুল ইসলাম জিনুকে উৎসর্গ করলাম। ভালো থেকো ভালুকা…
ছবি : মো. জাহিদুল ইসলাম জিনু

● লেখক পরিচিতি: কবি ও প্রাবন্ধিক।