নজরুল ইসলাম (যশোর প্রতিনিধ) ● যশোরের মনিরামপুর ও অভয়নগর ভবদাহ অঞ্চলের কৃষকেরা আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছে। দুই উপজেলার ৩টি বিলের প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমিতে এবার বোরো আবাদ করছে কৃষকেরা। বিল বোকড়, বিল কেদারিয়া ও বিল কপালিয়ায় এবার ইরি-বোরো ধান চাষ হচ্ছে।
গত ৪ বছর ভবদহের কারণে জলাবদ্ধতায় ওই এলাকায় কোনো ফসল ফলাতে পারেননি কৃষকেরা। কোনো কোনো এলাকায় উঠান থেকেই পানি নামেনি বিগত বছরগুলোতে। মানবেতর জীবনযাপন করেছে ওই তিন বিলের পাড়ে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ।
পানি ইন্নয়ন বোর্ড (পাউবি) যশোরের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জলাবদ্ধতা দূর করতে ২০২১সালের জানুয়ারি থেকে বৈদ্যুতিক ২০টি সেচযন্ত্র দিয়ে সেচের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত এ প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা।
এ বছরের ২২জানুয়ারি থেকে আপদকালীন ব্যবস্থা হিসেবে ৩ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে প্রতিটি ৩৫ কিউসেক ক্ষমতা সম্পন্ন আরও ৪টি সেচযন্ত্র বসানো হয়েছে। যা দিয়ে প্রতিদিন পানি নিষ্কাশন করা হচ্ছে। অভয়নগরের শ্রী নদীর উপর ভবদহ স্লুইসগেটে গত ৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার সেখানে গিয়ে দেখা গেছে, ভবদহ-২১ভেন্ট (কপাট) স্লুইসগেটের ১৪ টি সেচযন্ত্রের মাধ্যমে অপর পাশে নদীতে ফেলা হচ্ছে। প্রায় ২০০ মিটার দূরে শ্রী নদীর অপর শাখার উপর ৯ ভেন্ট স্লুইসগেটে।
স্লুইসগেটের উপর ৫টি বৈদ্যুতিক সেচযন্ত্র বসানো রয়েছে। সেচযন্ত্র দিয়ে নদীর এপাশ থেকে ওপাশে সেচ দিয়ে পানি ফেলা হচ্ছে। যার ফলে এ বছর পানি কিছুটা কমেছে। কিন্তু এলাকার সাধারণ মানুষ এখনো তাদের শঙ্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
সরজমিনে এলাকার কৃষকদের সাথে আলাপকালে তারা জানান, এ বছর বৃষ্টির পরিমাণ অনেক কম। যাতে করে জলাবদ্ধতা তেমন প্রকট আকার ধারণ করেনি। তাই এবারের বোরো আবাদ করতে পারছে। কিন্তু আবার যদি দু-বছর আগের মতো বৃষ্টি হয় তাহলে আবারও তলিয়ে যেতে পারে সারা এলাকা।
তখন এই সেচের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশন কতটা কার্যকরী হবে সেটা ভেবেই তাদের শঙ্কা কাটছে না। তবুও ওই এলাকার বোরো চাষীরা এবার বেশ খুশি। যে কারণেই হোক না কেন তারা এবার ধান চাষ করতে পারছে। ৪ বছর পর তারা আবার তাদের ঘরে ফসল তুলবে এই আশায় বুক বেধেছে কৃষকেরা।