খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ উৎসব বড়দিনকে সামনে রেখে দুর্বৃত্তরা ধর্ম প্রচারক, পুরোহিত এমনকি সাধারণ খ্রিষ্টভক্তদেরও হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। কিন্তু কেন? ইতিমধ্যেই আমার কাছে এরূপ তিনটি পত্র হস্তগত হয়েছে । এটি খুবই আশ্চর্যজনক মনে হয়েছে, কেন এই হুমকি ও হত্যার মতো ফরমান। আজ থেকে প্রায় ৯ বছর পূর্বে ২০১৫ সালে রংপুরের ৯টি চার্চসহ ১০টি প্রতিষ্ঠানকে একইরূপ হুমকি প্রদান করা হয়েছিল। ওই সময় রংপুর ব্যাপ্টিষ্ট চার্চের দায়িত্বে ছিলেন রেভা. বার্ণাবাস হেমব্রম। তৎকালীন সময়ে টেলিভিশনের বদৌলতে আমরা দেখেছিলাম, প্রাপ্ত চিঠি ও খামসহ গির্জার বাইরের গেটে দাঁড়িয়ে তিনি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশে যারা খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচার করছে, তাদের সকলকে এক এক করে বিদায় করা হবে।’ আরো লেখা ছিল—‘যা খাওয়ার খেয়ে নেন, তারপর আপনাকে পৃথিবী থেকে যেতে হবে… যারা খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচার করে তাদের এক এক করে হত্যা করা হবে… বাংলাদেশে মুসলমান আছে কিনা, সরকার যেন টের পায়… ।’ পত্র প্রেরকের নাম অতুল রায়, উত্তরপাড়া, কোমলপুর, সদর, দিনাজপুর থাকলেও চিঠি শুরু করা হয়েছিল, ‘ইয়া আল্লাহ’ শব্দ দুটো দিয়ে। রেভারেন্ড হেমব্রম বলেছিলেন, ‘এর আগে ফাদার লূক এবং ফাদার পিয়ের পারুলারিকে হত্যার চেষ্টার পর থেকে তিনি উদ্বিগ্ন ছিলেন। বুধবার রাতে চিঠি পাওয়ার পর আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।’ হুমকি প্রাপ্ত অন্যান্য চার্চ ও সংগঠনগুলো হলো—কাউনিয়া চার্চ অব গড, ফেইথ বাইবেল চার্চ, যিহোবা শালোম এজি চার্চ, টালিথা কুমি চার্চ, তনকা ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ, দাউদিপুকুর ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ, ধাপ উদয়পুর ক্যাথলিক চার্চ, হাসিয়া টালিথা কুমি চার্চ, কইলোচিয়া বাইবেল চার্চ ও সাধু ফিলিপ মেরি ক্যাথলিক চার্চ এবং ওয়ার্ল্ড ভিশনসহ খ্রিষ্টিয়ান প্রতিষ্ঠানসমূহ। শুধু রংপুর নয়, দিনাজপুর বীরগঞ্জ উপজেলার নিজপাড়া ক্যাথলিক চার্চের যাজক কার্লস টপ্প্যকে খুদে বার্তায় হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। প্রাপ্ত বার্তায় লেখা হয়েছিল—‘ ‘আইএসের নির্দেশে আপনাকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে হত্যা করা হবে, তা আপনি নিজপাড়ায় থাকেন বা দিনাজপুরে। যা খুশি খেয়ে নিন।’’ বৃহত্তর রংপুর বিভাগে একের পর হত্যা ও হত্যার হুমকির পর গোয়েন্দা কর্মকর্তা ও অপরাধ বিশ্লেষকরা বিশ্লেষণ করে বলেছেন, ‘‘এই তথ্য প্রমাণ করে, তারা একই উগ্রবাদী গ্রুপের সদস্য। তারা এখন যা করছেন, তা ড্রেস রিহার্সেল। সামনে বড়ো কোনো অঘটন ঘটানোর পরিকল্পনা আছে তাদের। তারা তাদের ‘কতলনীতি’ বাস্তবায়ন করছেন।’’ তৎকালীন আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সাইবার নিরাপত্তা বিভাগের ডিরেক্টর অপারেশন তথ্য প্রযুক্তিবিদ তানভীর হাসান জোহা বলেছিলেন, ‘‘আমরা সোশ্যাল নেটওয়ার্ক পর্যবেক্ষণে দেখেছি, বাংলাদেশে জেমমবি সাধারণ বোমা এবং রিভালবার ব্যবহার করে হামলা ও হত্যায়। আর আনসারুল্লাহ বাংলা টিম সাইকেল অথবা মোটরসাইকেল ব্যবহার করে এবং হত্যা করে চাপাতি বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে। এটা দুই গ্রুপের দুই ধরনের কতল নীতি। আনসারুল্লাহ প্রথমে সাইকেল ব্যবহার করলেও এখন মোটরসাইকেল ব্যবহার করে। আর জেএমবিও টার্গেট হত্যাকাণ্ডে মোটরসাইকেল ব্যবহার করে।’’
বড়দিনের পূর্বে প্রাপ্ত পত্রে দুর্বৃত্তরা লিখেছে, ‘‘ প্রতি, মিষ্টার, লাভলু সাদিক লেবিও খ্রীষ্টান ধর্ম প্রচারক- খাসবাগ- কোতোয়ালি মেট্রো. রংপুর। মহাশয়, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আপনাকে জানাচ্ছি শান্তির ধর্মের শুভেচ্ছা। আমরা বিগত বছরগুলোতে আপনাকে নানানভাবে আমাদের পক্ষে অনুরোধ করছি যেন আপনি আর খ্রীষ্টান ধর্ম মুসলামনদের মধ্যে প্রচার না করেন। আপনার বিরুদ্ধে ২টি মামলা হয়েছে গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে তারপরও আপনি খ্রীষ্টান ধর্ম প্রচার কাজ বন্ধ করেননি। আপনার আর সুযোগ নেই আপনাকে কুড়িগ্রামের হোসেন আলীর মতো পরিবারসহ বিদায় দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে স্থানীয় সাথী বন্ধু ছাত্র শিবির সংগঠনকে আর আপনার মস্তকের মূল্য দিতে চেয়েছেন ৫০ লক্ষ টাকা হিলফুল ফুজুল সংগঠন এবার যিশুকে বলুন আপনাদেরকে যেন রক্ষা করেন। আপনি একজন মাদ্রাসার ছাত্র হয়ে মুসলিম থেকে খ্রীষ্টান হয়েছেন আবার মুসলমানদেরকে খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করে আসিতেছেন বিগত ২০০৭ সাল থেকে। আমাদের নিকট সম্পূর্ণ হিসাব নিকাশ আছে। প্রমাণ পেশ করলাম—ভেলাবাড়ীর- জবানকারী লোহাকুচির-জয়নাল মুন্সী, সাপ্টিবাড়ির-এনামুল প্রফেসার, পীরগাছার ফয়েজ সাতমাথার-মমতাজ, বদরগঞ্জের- আফজাল চৌধুরী,পাইকের ছড়া কুড়িগ্রামের ডাক্তার ফজর আলী ফিলিপ এই নেতা অনেক মুসলমান ভাই ও বোনদের খৃষ্টান পাদ্রী দলের লোক মারফত ধর্মান্তরিত করেছেন সহ কয়েক হাজার মুসলিম নিরীহ গরীব মানুষেকে টাকার লোভ লালসা দিয়ে লালমনিরহাট-কুড়িগ্রাম-রংপুর-দিনাজপুর-গাইবান্ধাসহ ৮টি জেলায়। আমরা অতি শীঘ্রই জিহাদী কাজ আরম্ভ করবো— ইনশাআল্লাহ। মরলে শহীদ # বাঁচলে গাজি। আর বড়দিন করারও সুযোগ হলো না আপনাদের— ৬৪ জেলায় বাংলাদেশে। অনুমোদন প্রদান করা হলো: হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের পক্ষে সচিব-ঢাকা। ০৮-১২-২০২৪’’
অপর একটি চিঠিও সচেতন পাঠকদের উদ্দেশ্যে তুলে ধরলাম— ‘প্রতি মি. পৌল কারী পুরোহিত/ (প্রধান শিক্ষক)- আর্শিবাদ এ,জি স্কুল ও এ,জি চার্চ-রামপুরা, উপশহর, কোতোয়ালি মেটো: রংপুর। মহোদয়, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ/ছাত্র শিবির-এর পক্ষ থেকে আপনাকে জানাচ্ছি ইসলামি দাওয়াতের শান্তির ধর্মের বারতা। সেই সাথে আপনাকে অবগত করছি যে, আপনি ও আপনার মিশন সংগঠনের দীপ্তি বিশ্বাসসহ মুসলিম সম্প্রদায়ের জায়গায় জোরপূর্বক দখল করে চার্চ ঘর নির্মাণ করেছেন, উক্ত ঠিকানা। তাছাড়া ও আপনাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ আমাদের নিকট স্থানীয় লোকজন অবগত করেছেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজকে টাকার লোভ লালসা দিয়ে ধর্মান্তরিত করেন দীর্ঘদিন ধরে। প্রমাণ পেশ করলাম: সামছুল, পাঠান, আশরাফুল, মোবারকসহ কয়েক শত লোকজনকে চার্চের ভিতর থাকা পানির হাউজে ধর্মীয় নীতিতে পাক গোসল করিয়াছেন। এসবের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন? যেকোনো সময় আপনার নিকট আসিতেছি আর সামনে বড়দিনের অনুষ্ঠানের খাবার খেতে পারছেন না—তার আগেই আপনি ও আপনার পরিবারের সবাইকে দুনিয়া থেকে বিদায় দেওয়া হচ্ছে। সুতরাং খাটো লোকের নাটক বেশি দেখতেছি ইদানীং। তাছাড়া ও রংপুর মহানগর এলাকায় যারা মুসলিম থেকে খৃষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে তাদের ও বিদায়ী তাওয়াফ এর মাগফিরাত কামনা রইল। ইতিমধ্যে আমাদের হাতে তালিকা এসেছে, রংপুর জেলার ৮টি উপজেলার সহ সারা বাংলাদেশ এর। তাই ভালো আমিষ শর্করা শেষ খাবার হিসেবে খেয়ে নিন, এসব থেকে বাঁচার উপায় হল: তওবা পড়ে, ইসলামের পতাকার তলে নতুন জীবন শুরু করুন। পরিশেষে বলতে চাই পুরোহিত বাবু দোযগে না গিয়ে শান্তির ধর্মের ফিরে আসুন, আপনি তো একজন মুসলিম ধর্মের ক্বারী বা হাফেজ ছিলেন, সিদ্ধান্ত আপনার মতামত আপনার। তা না হলে দেখা হচ্ছে শীঘ্রই ইনশাআল্লাহ। পক্ষে মহাসচিব, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। ছাত্র শিবির কর্মীরা- রংপুর বিভাগের। ০৪-১২-২৪ ।’’
তিনটি পত্র পর্যালোচনার পর কতকগুলো বিষয় প্রতীয়মান হয়েছে—
প্রথমত, তিনটি পত্রই কম্পিউটারে লেখা। ভাষার ব্যবহার এবং বানান রীতিগুলো একইরূপ। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’র নাম তিন পত্রেই ব্যবহার করা হয়েছে। ডিসেম্বর ৪ দুটি এবং ৮ ডিসেম্বর একটিতে তারিখ ব্যবহার করা হয়েছে। ভাষা, বানান রীতি এবং কম্পিউটারে লেখার বৈশিষ্ট্যে এক প্রকার নিশ্চিত হওয়া যায় যে, পত্রগুলো একই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান থেকে লেখা হয়েছে।
দ্বিতীয়ত, তিনটি পত্রেই খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারের বিরোধিতা করা হয়েছে। শুধু প্রচার নয়, রাষ্ট্রের কোনো নাগরিককে ধর্মান্তরিত না করা এবং পত্র প্রাপকেও ইসলাম ধর্মে প্রত্যাবর্তনের আদেশ দিয়েছেন। স্বয়ং প্রভু যীশু খ্রিষ্ট অনুসারীদের নির্দেশ দিয়েছে, ‘‘তোমরা গিয়া সমুদয় জাতিকে শিষ্য কর; পিতার ও পুত্রের ও পবিত্র আত্মার নামে তাহাদিগকে বাপ্তাইজ কর; আমি তোমাদিগকে যাহা যাহা আজ্ঞা করিয়াছি, সেই সমস্ত পালন করিতে তাহাদিগকে শিক্ষা দেও।’’ দেশের প্রাপ্ত বয়স্ক নাগরিক যে কোনো ধর্ম অবলম্বন, পালন ও প্রচারের অধিকার নিশ্চিত করেছে পবিত্র সংবিধান। আন্তর্জাতিক আইনেও ধর্ম পরিবর্তনের অধিকার স্বীকৃত।
তৃতীয়ত, অভিযোগ উত্থিত হয়েছে, লোভ কিংবা অর্থ প্রদান করে খ্রিষ্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হচ্ছে! অবশ্য এরূপ অভিযোগ নতুন নয়, বহু পুরোনো। অতঃপরও পুনর্বার বলা যায়, লোভ-কিংবা অর্থের বিনিময়ে ধর্মান্তরিত করা যেমন আইনের চোখে দণ্ডণীয় অপরাধ, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও গর্হিত এবং নীতি বিবর্জিত কাজ। এরূপ অপরাধে সাব্যস্ত কোনো ব্যক্তি আইনের সোপর্দ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা আবশ্যিক।
চতুর্থত, মৃত্যু পরোয়ানা দেওয়া হয়েছে খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারক ও পুরোহিতদের। ধর্ম প্রচার যদি সাংবিধানিক অধিকার হয় কিংবা কাউকে লোভ বা অর্থের লালসা দিয়ে নয়; প্রভু যীশু খ্রিষ্টের শিক্ষা, মূল্যবোধ, ন্যায়নীতি, ভালোবাসা কিংবা সংস্কার চেতনাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে কেউ গ্রহণ করতে আগ্রহী হোন, সেক্ষেত্রে প্রচারক/পুরোহিতের দোষের কোনো কারণ নেই। যিনি গ্রহণ করবেন একমাত্র তারই ব্যক্তি স্বাধীনতা ও অধিকারের ওপর বর্তায়। প্রচারক/পুরোহিতদের হত্যা তো কোনো ধর্মই সমর্থন করে না, সেটি হোক ইসলাম, হিন্দু, বৌদ্ধ কিংবা খ্রিষ্টান ধর্ম।
পঞ্চমত, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ ও ছাত্র শিবিরের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রত্যেকটি দলের একটি আদর্শ ও মূল্যবোধ রয়েছে। কোনো একটি গোষ্ঠী উপরিউক্ত নাম ব্যবহার করে অর্জিত সুনাম ও ব্যাপ্তির ব্যতয় ঘটাতে তৎপর। কারো নাম ব্যবহার করে অন্য ধর্মাবলম্বীদের ভীতি প্রদর্শন, হত্যার মতো মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডের উল্লেখপূর্বক পত্র প্রেরণ সংগঠন থেকেই দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব বর্তে।
ষষ্ঠত, আন্তর্জাতিক প্রচার-প্রচারণা প্রাপ্তির লক্ষ্যে কী রংপুরের খ্রিষ্টিয়ানদের বেছে নেওয়া হয়েছে! পূর্বের ঘটনার ধারাবাহিকতায় অশনি সংকেত খুব একটা নেতিবাচক নয়। ধর্ম প্রচারকে স্তব্ধ করতেই কী রংপুরকে টার্গেট করা হয়েছে।
সপ্তমত, একটি গ্রুপ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার লক্ষ্যে উঠেপড়ে লেগেছে। ইতিধ্যেই মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সর্বধর্মের ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ নিয়ে সংলাপ করেছেন। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘…প্রকৃত খবরটা জানতে হবে। সেই প্রক্রিয়াটা প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এতবড় দেশে যে কোনো ঘটনা ঘটতে পারে, কিন্তু প্রকৃত তথ্য জানতে হবে, যাতে তাৎক্ষণিক সমাধান করা যায়। যেদিক থেকেই হোক, দোষী, দোষীই। তাকে বিচারের আওতায় আনা সরকারের দায়িত্ব । ’’ যিনি বা যারা এরূপ সাম্প্রদায়িক ও অসহিষ্ণু পরিস্থিতি সৃষ্টিতে উদ্যোগী, তাদের বিষয়ে দেশের আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে আরো সতর্ক ও সজাগ হতে হবে।
প্রভু যীশু খ্রিষ্টের বাণীই হচ্ছে—ভালোবাসা, ঈশ্বর মানুষকে ভালোবেসেছেন; ভালোবেসে পাপের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি দিতেই যীশু খ্রিষ্টকে উৎসর্গ করেছেন। আমরাও যেন অপরজনকে ভালোবাসি, প্রতিবেশীকে ভালোবাসি। প্রতিবেশী তো আমার পার্শ্ববর্তী হিন্দু, বৌদ্ধ, ইসলাম, বাহাই, আদিবাসী-অন্ত্যজ শ্রেণীর মানুষজন। যীশু খ্রিষ্ট শিক্ষা দিয়েছেন—দৃশ্যত মানুষকে ভালোবাসতে ব্যর্থ হলে, অদৃশ্য ঈশ্বরকে ভালোবাসা যায় না। বিশ্বাস, প্রত্যাশা ও প্রেম (ভালোবাসা)-এর মধ্যে ভালোবাসাই মহৎ এবং শ্রেষ্ঠ (১ম করিন্থীয় ১৩:১৩)।
মিথুশিলাক মুরমু : আদিবাসী গবেষক ও লেখক।