বর্ষায় বাংলাদেশের প্রকৃতি সেজে ওঠে রঙিন সাজে। প্রকৃতির এমন রূপ দেখতে পাহাড়-হাওর ঘেরা সিলেট দর্শনে বেরিয়ে পড়েন অনেক পর্যটকরা। সিলেটের বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান আছে, যেখানকার সৌন্দর্য শুধু বর্ষায় গেলেই দেখা যায়। তাই বর্ষার মৌসুমে সিলেট ভ্রমণে গেলে অবশ্যই সেসব স্থানে যেতে ভুলবেন না।
জাফলং
জাফলং সারাদেশে এক নামে পরিচিত। সিলেট ভ্রমণে যাবেন অথচ জাফলং যাবেন না তা কি হয়! খাসিয়া জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত জাফলং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি। পিয়াইন নদীর তীরে স্তরে স্তরে বিছানো পাথরের স্ত‚প জাফলংকে করেছে আকর্ষণীয়।
সীমান্তের ওপারে ভারতের পাহাড় টিলা, ডাউকি পাহাড় থেকে অবিরামধারায় প্রবাহমান জলপ্রপাত, ডাউকি ব্রিজ, পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ হিমেলপানি, উঁচু পাহাড়ে গহিন অরণ্য ও শুনশান নিরবতার কারণে এলাকাটি পর্যটকদের দারুণভাবে আকৃষ্ট করে।
সিলেটনগরী থেকে ৬২ কিলোমিটার উত্তর পূর্ব দিকে গোয়াইনঘাট উপজেলায় জাফলংয়ের অবস্থান। জাফলংয়ে শীত ও বর্ষা মৌসুমের সৌন্দর্যের রূপ ভিন্ন।
লালাখাল
স্বচ্চ নীল জলরাশি। দুই ধারে প্রাকৃতিক দৃশ্য। অপরুপ সোন্দর্যময় এক স্থান হলো লালাখাল। দীর্ঘ নৌ পথ ভ্রমণের সাধ যেকোনো পর্যটকের কাছেই যেন এক দুর্লভ আর্কষণ। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের স্থান এটি। সেইসঙ্গে রাতে সেখানকার সৌন্দর্য বহুগুণ বেড়ে যায়।
সিলেট জেলার জৈন্তাপুর উপজেলার সন্নিকটে অবস্থিত লালাখান। ভারতের চেরাপুঞ্জির ঠিক নিচেই লালাখালের অবস্থান। চেরাপুঞ্জি পাহাড় থেকে উৎপন্ন এই নদী বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত।
রাতারগুল
রাতারগুল সোয়াম্প ফরেস্টের সৌন্দর্য দেখলে আপনি অবশ্যই মুগ্ধ হয়ে যাবেন। হিজল গাছের সারি ডুবে আছে পানিতে। তার ফাঁক দিয়ে নৌকায় চলাচল করার আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন এই জলাবনে গেলে। ইঞ্জিন ছাড়া বৈঠা বাওয়া নৌকা দিয়ে এ বনে প্রবেশ করতে হয়।
হরেক রকম পাখিরও দেখা পাবেন সেখানে। অবশ্যই মনে রাখতে হবে জলাবন একটি সংরক্ষিত বন, এখানে কোনো রকম হৈ-হুল্লোড় করবেন না, অপচনশীল কোনো দ্রব্য পানিতে নিক্ষেপ করবেন না। বনের মধ্যে একটি ওয়াচ টাওয়ার আছে সেখানে উঠে উপর থেকে বনটা দেখতে পারবেন।
বিছানাকান্দি
মেঘালয়ের কোল ঘেঁষা সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবস্থিত বিছানাকান্দি। এটি মূলত একটি পাথরের কোয়ারী। হাদারপার থেকে নৌকা নিয়ে বিছানাকান্দি যাওয়ার পথটাও অনেক সুন্দর। পথের দু-পাশে সবুজের ছড়াছড়ি। যেখানে পাথর নেই; সেখানে নদী বেশ খরস্রোতা।
হাকালুকি হাওর
এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড়ো হাওর। এর আয়তন ১৮ হাজার ১১৫ হেক্টর। শুধু বিলের আয়তনই ৪ হাজার ৪০০ হেক্টর। ভ‚-তাত্তি¡কভাবে এর অবস্থান উত্তরে ভারতের মেঘালয় পাহাড় এবং পূর্বে ত্রিপুরা পাহাড়ের পাদদেশে। এই হাওরে ৮০-৯০টি ছোটো, বড়ো ও মাঝারি বিল আছে। শীতকালে এসব বিলকে ঘিরে পাখিদের বিচরণে মুখর হয়ে উঠে গোটা এলাকা।
শাহেদ কায়সার