একটা ভালো দিনের জন্য যেমন অনেক খারাপ দিনের সাথে যুদ্ধ করে সফলতা অর্জন করতে হয় তেমনই ভুল জায়গায় স্যাক্রিফাইজ ও ভুল মানুষের সাথে কম্প্রোমাইজ আমাদের জীবনে সাময়িক আনন্দ দিলেও তা খুব বেশি দিন স্থায়ী হয় না। আমাদের প্রথম হতে হলে অবশ্যই বেজোড় থাকতে হবে। দুইজন তো আর একসাথে প্রথম হতে পারে না। আবার শুধু ভাগ্য ভাগ্য করে চিৎকার কি সফল হওয়া যায়। সাথে প্রয়োজন প্রচুর পরিশ্রম যা আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায়। অসলে ভাগ্যকে প্রভাবিত করে পরিশ্রম। পরিশ্রম মানেই তো চেষ্টা। নিজে আমি যত ছোটো কাজই করি না কেন, তা যদি আত্ম সন্তুষ্টির সাথে করতে পারি তবে তা দিয়ে সফলতা পাওয়া সম্ভব, যা নিজেকে যশ ও সম্পূর্র্ণতার দিকে নিয়ে যায়। কেননা ভাগ্য = প্রস্তুতি + সুযোগ। আর এখন সেই খেলাই জমেছে। জিম্মি জিম্মি খেলা। প্রস্তুতি নিয়েই সুযোগের হাতে ছেড়ে দিচ্ছে। আর সুযোগ ছাড়পত্র দিলেই ব্যাস, ভাগ্য জয়ী হয়ে গেল আমার দর্শনে। কিন্তু আমায় তো, আশার আগুন দগ্ধ করে হতাশার শিখা হয়ে, বারুদের ওপর আছি যেন বসে এই শঙ্কা নিয়ে, ভুলে ভুলে চলছে জীবন আত্মঘাতী হয়ে। কেননা আমরা চায়ে মিষ্টি খাই না কিন্তু চিনির রসে ডুবানো জিলাপী খেতে অভ্যস্থ হয়ে গেছি। শান্তি পেতে চাই কিন্তু অন্তর পরিষ্কার করে নয়। নিজের চিন্তার নিয়ন্ত্রণে যা সত্য উপযুক্ত খাঁটি সুন্দর ও সম্মান পাবার যোগ্য সেই বিষয়গুলো ভাবা উচিত আমাদের।
আচ্ছা, আঘাত যদি প্রতিঘাত হয়ে ফিরে আসে, তবে কারো জন্য শান্তির চেষ্টা করলে, বা ভালো করলে তা কেন ফিরবে না। তা কেন প্রশান্তি হয়ে ফিরে আসতে পারে না। আগুন যেমন আলো দিতে পারে তেমন তা পুড়িয়ে ফেলতেও পারে। ঠিক এমনই দুটো চরিত্রের মধ্যেই আমরা সবাই থাকি। একটা বাহিরের যা মানুষ দেখে কিন্তু অনুভব করতে পারে না। আর ভেতরেটা শুধুই অনুভবের যা ঈশ্বর দেখেন। ঘুম থেকে উঠে কতই না বক্তব্য শুনতে অভস্ত্য হয়ে গেছি আমরা। এই সব কিছুই যেন নিজের স্বার্থ রক্ষার জন্য। যার যার স্বার্থ নিয়ে তার তার স্বার্থ চেতন। স্বার্থ ছাড়া মানুষ হয়ত নেই। আর থাকবে কেন। ঈশ্বরও তো তার স্বার্থ নিয়েই থাকে। নইলে কি শয়তানের সাথে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে লিপ্ত থাকতে পারেন।
ভাষা ও ধারণার মারপ্যাঁচে পড়ে আমরা আটকে গেছি আজ। চলার পথে শুধুই হোঁচোট খেতে থাকি। একবার পড়ে যাই আবার উঠে চলার চেষ্টা করি। আবার ভুলে যাই সব কিছু। যেন আলঝেইমারে (অষুযবরসবৎ’ং) আক্রান্ত। মানে স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়া। আমাদের সবারই মনে হয় চিনাবাদাম খাওয়া উচিত। কেননা বিজ্ঞানীদের মতে এর ফোলেট আমাদের জ্ঞানীয় কার্যকলাপের সমস্যা ঠেকাতে দারুণ কার্যকর। আমাদের ব্যক্তিগত সাফল্য কতটা শক্তিশালী তা তো দলছুট নেতাদের দেখলেই স্মৃতি ফিরে আসে। যেখানে দুইদিন আগে নেতার সাথে দেখা করার জন্য লাইন দিতে হতো সেখানে আজ যেন নেতা জন-শূন্যতায় ভুগছে। আর তার সাথে যারা কাজ করেছে তারা যেন নেতা শূন্য হয়ে রাজনীতি বাদ দিয়ে অন্য কাজে যেতে ইচ্ছা পোষণ করছেন। যারা সব সময় অক্টোপাশের মতো লেগেই থাকত মধুর লোভে আজ তারা দূরে। মনে বাখা দরকার যে দুটো ভুল কখনো একটা শুদ্ধ তৈরি করতে পারে না ।
অলোক মজুমদার : চিকিৎসক ও লেখক।