বিভাগীয় সম্পাদক • গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের সাময়িক বরখাস্ত মেয়র জাহাঙ্গীর আলমকে ক্ষমা ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সই করা এক চিঠিতে এই ক্ষমা করার কথা জানানো হয়েছে।
২১ জানুয়ারি শনিবার জাহাঙ্গীর আলম নিজেই বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করে বলেছেন, আমার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে দল থেকে চিঠি দিয়েছে। শনিবার চিঠি পেয়েছি। আশা করছি শিগগিরই মেয়ের পদও ফেরত পাবো।
২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ওই সময় তার দলের প্রাথমিক সদস্যপদও বাতিল করা হয়। এর পরপরই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় মেয়র পদ থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গোপনে ধারণ করা মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের কথোপকথনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তাতে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও গাজীপুর জেলার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করতে শোনা যায়। এরপর কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। তবে নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় ওই বছরের ১৯ নভেম্বর দলের কার্যনির্বাহী সংসদ জাহাঙ্গীর আলমকে বহিষ্কার করে।
ক্ষমা ঘোষণা করে দেওয়া ওবায়দুল কাদেরের স্বাক্ষর করা চিঠিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা, তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থী সম্পৃক্ততার জন্য ইতোপূর্বে জাহাঙ্গীর আলমকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার/অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগ স্বীকার করে তিনি ভবিষ্যতে এই ধরনের কর্মকাণ্ডে যুক্ত না হওয়ার বিষয়ে লিখিত অঙ্গীকার করেছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে দলের গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের সিদ্ধান্ত অনুসারে তাকে ক্ষমা করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে তা ক্ষমার অযোগ্য বিবেচিত হবে বলে চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, গত ১৭ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ড ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে বহিষ্কার হওয়া নেতাদের আবেদনের ভিত্তিতে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়। ওই সভার আগে যারা দোষ স্বীকার করে আবেদন করেছিলেন, তাদের ক্ষমা ঘোষণা করা হয়েছিল। পাশাপাশি ভবিষ্যতে যারা দোষ স্বীকার করে আবেদন করবেন, তাদেরও যাচাই-বাছাই করে ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত হয়।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, দল আমার প্রতি সদয় হয়ে আমার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে। এজন্য দলীয় সভাপতি জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। দলে আমি যে পদে ছিলাম সে পদে যেহেতু অন্য কাউকে নির্বাচন করা হয়েছে—ফলে দল আমাকে নতুন করে যে দায়িত্ব দিবে তা পালন করব।