উপমহাদেশে ধাতব মুদ্রা, স্বর্ণ মুদ্রা, রৌপ্য মুদ্রা ও ব্যাংক নোট সংগ্রাহক হিসাবে মো. রবিউল ইসলাম একটি অতি পরিচিত ও প্রিয় মুখ। তিনি ইতিপূর্বে শখের মানুষ পত্রিকায় একাধিক মুদ্রার উপর প্রতিবেদন লিখেছেন। তিনি যেহেতু কর্মসূত্রে প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকেন, সেই কারণে লেখার দিকে তেমন মনযোগ দিতে পারেন না। কিন্তু মুদ্রা সংগ্রহ করতে গিয়ে এমন এক স্থানে পৌঁছে গিয়েছেন সেখানে এই বাংলার কারর পক্ষে পৌঁছানো সম্ভব হবে না কোনোদিন। যারা তাঁর সংগ্রহ শালা দেখেছেন তাঁরা বিষয়টি জানেন। যারা তাঁর ওয়েবসাইট দেখেছেন তারাও আমার সাথে একমত হবেন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২০, বঙ্গবন্ধু নভ থিয়েটারে আনুষ্ঠানিকভাবে মো. রবিউল ইসলাম এর লেখা ‘কয়েন্স অফ বাংলাদেশ’ বইটির মোড়ক উম্মোচন করা হয়। এবার মূল বইটি নিয়ে আলোচনা করছি। পৃষ্ঠা নং-১ এ বাংলাদেশের এক পয়সার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৭৪ সালে বাজারজাত করা হয়। পৃষ্ঠা নং-২ এ পাঁচ পয়সার পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এই মুদ্রাটি ১৯৭৩, ১৯৭৪ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-৩ এ পাঁচ পয়সার পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এই পাঁচ পয়সার লাঙ্গলের ছবি মুদ্রিত হয়। এই মুদ্রাটি, ১৯৭৪, ১৯৭৫, ১৯৭৬, ১৯৭৭, ১৯৭৮ ও ১৯৭৯ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-৪ এ পাঁচ পয়সার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৭৭, ১৯৭৮, ১৯৭৯, ১৯৮০ ও ১৯৯৪ সালে বাজারজাত করা হয়। পৃষ্ঠা নং-৫ এ দশ পয়সার পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এই মুদ্রাটি ১৯৭৩ ও ১৯৭৪ সালে বের হয়। এই দশ পয়সায় পান পাতার ছবি মুদ্রিত হয়। পৃষ্ঠা নং-৬ এ দশ পয়সার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৭৪, ১৯৭৫, ১৯৭৬, ১৯৭৭, ১৯৭৮ ও ১৯৭৯ সালে বের হয়। এই দশ পয়সায় ট্রাক্টরের ছবি মুদ্রিত হয়। পৃষ্ঠা নং-৭ এ দশ পয়সার পরিচিত তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৭৭, ১৯৭৮, ১৯৭৯ ও ১৯৮০ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-৮ এ দশ পয়সার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৮৩ ও ১৯৯৪ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-৯ এ পঁচিশ পয়সার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৭৩ সালে বের হয়। এই পঁচিশ পয়সায় ইলিশ মাছের ছবি মুদ্রিত হয়। পৃষ্ঠা নং-১০ এ পঁচিশ পয়সার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৭৪, ১৯৭৫, ১৯৭৬, ১৯৭৭, ১৯৭৮ ও ১৯৭৯ সালে বের হয়। এই পঁচিশ পয়সায় বিভিন্ন ফল ও মাছের ছবি মুদ্রিত হয়। পৃষ্ঠা নং-১১ এ পঁচিশ পয়সার পরিচিত তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৭৭, ১৯৭৮, ১৯৭৯, ১৯৮০, ১৯৮৩, ১৯৮৪, ১৯৯১ ও ১৯৯৪ সালে বের হয়। এই মুদ্রায় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের ছবি মুদ্রিত হয়। পৃষ্ঠা নং-১২ এ পঞ্চাশ পয়সার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৭৩ সালে বের হয়। এই মুদ্রায় কবুতরের ছবি মুদ্রিত হয়। পৃষ্ঠা নং-১৩ এ পঞ্চাশ পয়সার পরিচিত তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৭৭, ১৯৭৮, ১৯৭৯, ১৯৮০, ১৯৮৩, ১৯৮৪ ও ১৯৯৪ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-১৪ এ পঞ্চাশ পয়সার মুদ্রার পরিচিত তুলে ধরা হয়। এই মুদ্রাটি ২০০১ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-১৫ এ বাংলাদেশের প্রথম এক টাকার মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৭৫, ১৯৭৬ ও ১৯৭৭ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-১৬ এ এক টাকার পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এই মুদ্রাটি ১৯৯২, ১৯৯৩ ও ১৯৯৫ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-১৭ এ এক টাকার মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এই মুদ্রাটি ১৯৯৬ ও ১৯৯৭ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-১৮ এ এক টাকার পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এই মুদ্রাটি ২০০২ ও ২০০৩ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-১৯ এ এক টাকার পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এই মুদ্রাটি ২০১০, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে বের হয়। এই মুদ্রায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি মুদ্রিত হয়। পৃষ্ঠা নং-২০ এ দুই টাকার মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০০৪ ও ২০০৮ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-২১ এ দুই টাকার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০১০ সালে বের হয়। এই মুদ্রায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি মুদ্রিত হয়। পৃষ্ঠা নং-২২ এ দুই টাকার মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এই মুদ্রাটি ২০১৩ সালে বের হয়। এই মুদ্রায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি মুদ্রিত হয়। পৃষ্ঠা নং-২৩ এ পাঁচ টাকার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৯৪ সালে বের হয়। এই মুদ্রায় বঙ্গবন্ধু সেতুর ছবি তুলে ধরা হয়েছে। পৃষ্ঠা নং-২৪ এ পাঁচ টাকার মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৯৬ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-২৫ এ পাঁচ টাকার মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৯৬ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-২৬ এ পাঁচ টাকার মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০০৫ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-২৭ এ পাঁচ টাকার মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০০৬ বের হয়। পৃষ্ঠা নং-২৮ এ পাঁচ টাকার মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এই মুদ্রাটি ২০০৮ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-২৯ এ পাঁচ টাকার মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়। এই মুদ্রাটি ২০১২ ও ২০১৩ সালে বের হয়। এই মুদ্রায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ছবি মুদ্রিত হয়। এবার বাংলাদেশের স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হচ্ছে। পৃষ্ঠা নং-৩০ এ ৭ জন বীরশ্রেষ্ঠদের ছবিসহ এক টাকার মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি বর্তমানে একটি দুর্লভ মুদ্রায় পরিণত হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৯১ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-৩১ এ এক টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৯২ সালে বের হয়। এই মুদ্রায় পঁটিশতম অলিম্পিক গেমসকে তুলে ধরা হয়েছে। পৃষ্ঠা নং-৩২ এ এক টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রায় বন্য প্রাণীর ছবি বের হয়েছে। পৃষ্ঠা নং-৩৩ এ এক টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৯৩ সালে বের হয়। এই মুদ্রায় বিশ্বকাপ ফুটবল ১৯৯৪ এর বিষয়কে তুলে ধরা হয়েছে। পৃষ্ঠা নং-৩৪ এ দশ টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৯৬ সালে বের হয়। এই মুদ্রার বিষয়বস্তু বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী । পৃষ্ঠা নং-৩৫ এ দশ টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৯৬ সালে বের হয়। এই মুদ্রার বিষয়বস্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের রজত জয়ন্তী ১৯৭১-১৯৯৬। পৃষ্ঠা নং-৩৬ এ দশ টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৯৮ সালে বের হয়। এই মুদ্রার বিষয়বস্তু বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধন। পৃষ্ঠা নং-৩৭ এ পঁচিশ টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ১৯৯৮ সালে বের হয়। এই মুদ্রায় বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধনকে তুলে ধরা হয়েছে। পৃষ্ঠা নং-৩৮ এ বিশ টাকার স্মারক স্বর্ণ মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০০০ সালে বের হয়। এই মুদ্রাটি বাংলাদেশের প্রথম স্বর্ণ মুদ্রা। এই স্বর্ণ মুদ্রায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে তুলে ধরা হয়েছে। মুদ্রার এক পাশে প্রাণের শহীদ মিনারের ছবি অপর পৃষ্ঠায় বাংলাদেশ ব্যাংকের লোগো তুলে ধরা হয়েছে। পৃষ্ঠা নং-৩৯ এ দশ টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০১১ সালে বের হয়। এই মুদ্রার বিষয়বস্তু আইসিসি বিশ্বকাপ ক্রিকেট। পৃষ্ঠা নং-৪০ এ দশ টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০১১ সালে বের হয়। মুদ্রার বিষয়বস্তু কবিগুরু রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫০তম জন্মবর্ষ। পৃষ্ঠা নং-৪১ এ দশ টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০১১ সালে বের হয়। মুদ্রার বিষয়বস্তু বাংলাদেশের ৪০তম বিজয় বার্ষিকী। পৃষ্ঠা নং-৪২ এ দশ টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০১১ সালে বের হয়। এই মুদ্রার বিষয়বস্তু বিদ্রহী কবিতার ৯০ বছর। এই মুদ্রায় আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ছবি মুদ্রিত হয়। পৃষ্ঠা নং-৪৩ এ একশত টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০১৩ সালে বের হয়। এই মুদ্রার বিষয়বস্তু বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে শততম বর্ষ। পৃষ্ঠা নং-৪৪ এ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর শততম জন্মদিন উপলক্ষে একশত টাকার স্মারক মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০২০ সালে বের হয়। পৃষ্ঠা নং-৪৫ এ হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর শতবর্ষ উপলক্ষে স্বর্ণ মুদ্রার পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে। এই মুদ্রাটি ২০২০ সালে বের হয়। প্রতিটি মুদ্রার সাথে মুদ্রার ওজন, কোন উপকরণ দিয়ে মুদ্রাগুলি তৈরি করা হয়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনা লেখক মো. রবিউল ইসলাম বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন-সাথে সাথে ইতিহাসের পাতায় নিজের নামটিও লিখে ফেলেছেন।
বইটি প্রকাশ করেছে ব্লাক এন অরেঞ্জ। ডিজাইন করেছেন দেশ সেরা গ্রাফিক ডিজাইনার সাকিল হক। বইটি প্রথম সংস্করণ বের হয়েছে সেপ্টেম্বর, ২০২০ এ। যারা বাংলাদেশে ধাতব মুদ্রা ও স্মারক মুদ্রা সংগ্রহ করেছেন, বা ভবিষ্যতে করবেন, সেই সাথে যারা বাংলাদেশে মুদ্রা নিয়ে গবেষণা করতে ইচ্ছুক তাদের বইটি সংগ্রহ করার অনুরোধ করছি। বইটির মূল্য রাখা হয়েছে ১২০ টাকা। বইটির বহুল প্রচার কামনা করি।
সৈয়দ রশিদ আলম