মূল্যবোধের অবক্ষয় বর্তমানে আমাদের সমাজের সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। মানুষ সামাজিক জীব-ব্যক্তির যেমন চাহিদা আছে, তেমনি সমাজেরও চাহিদা আছে। সমাজ মানুষ থেকে সব সময় সামাজিক আচরণ প্রত্যাশা করে। প্রত্যেক সমাজে তার সদস্যদের আচরণ পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট নীতি থাকে। নীতিহীন সমাজ উচ্ছৃঙ্খল, বিভ্রান্তিকর ও অনিশ্চিত। নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ে মানুষের হৃদয়বৃত্তিতে ঘটছে যতসব অনাকাক্সিক্ষত পরিবর্তন। সমাজ ও পরিবারে বেজে উঠছে ভাঙনের সুর। নষ্ট হচ্ছে পবিত্র সম্পর্কগুলো। চাওয়া পাওয়ার ব্যবধান হয়ে যাচ্ছে অনেক বেশি। ফলে বেড়ে চলেছে নানাবিধ অপরাধপ্রবণতা। মা-বাবা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব সম্পর্কের এমন নির্ভেজাল জায়গাগুলোতেও ফাটল ধরেছে। ঢুকে পড়েছে অবিশ্বাস।
বর্তমান বিশ্বে মানুষের সঙ্গে মানুষের অসম প্রতিযোগিতা যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে মানুষে মানুষে দূরত্ব। ব্যক্তিজীবনে কমে আসছে ধৈর্যশীলতা। নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া কিংবা রাতারাতি বড়োলোক হওয়ার লোভও বিরাজ করছে মাত্রাতিরিক্ত। দেশ, জাতি, সমাজ, পরিবার ক্রমেই ধাবিত হচ্ছে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। একজন মানুষের চরম নৈতিক মূল্যবোধের ধাক্কায় ক্ষত-বিক্ষত হচ্ছে অন্য মানুষ। এককথায় দিন দিন মানুষের মানসিক বিকৃতি বাড়ছে। হতাশা বা অস্থিরতা বিরাজ করছে ব্যক্তিজীবন থেকে শুরু করে বেঁচে থাকার প্রতিটি ধাপে। হৃদয়ের মায়া-মমতা, স্নেহ-ভালোবাসাকে বিসর্জন দিয়ে মানুষ পাশবিক হয়ে উঠছে। এমন কোনো অপরাধ নেই, যা সমাজে সংঘটিত হচ্ছে না। স্ত্রী স্বামীকে, স্বামী স্ত্রীকে, মা-বাবা নিজ সন্তানকে, ভাই ভাইকে অবলীলায় হত্যা করছে। বেড়ে গেছে মাদকাসক্তের সংখ্যা। মাদকের অর্থ জোগাড় করতে জড়িয়ে পড়ছে নানান অপরাধে। এসব কারণে পারিবারিক বন্ধন, স্নেহ, ভালোবাসা, মায়া-মমতা, আত্মার টান সবই যেন আজ স্বার্থ আর লোভের কাছে তুচ্ছ। কেবল তাই নয়, সমাজের উচ্চবিত্তের তরুণরা বিপথগামী হয়ে পড়েছে। তারা জড়িয়ে পড়ছে খুন, ধর্ষণ ও মাদকাসক্তিসহ নানা অপরাধে।
শত সমস্যার বাংলাদেশে বর্তমানে অন্যতম একটি সমস্যা হচ্ছে-‘কিশোর গ্যাং’। মাঝে কিছুদিন স্তিমিত থাকলেও সমস্যাটি আবার দিন দিন প্রকট এবং সবার মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই কিশোর গ্যাং ছিনতাই, চাঁদাবাজী, অপহরণ, মাদক ব্যবসাসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। শুধু তা ই নয় খুন-খারাবীর মতো সমাজবিরোধী নানাবিধ কর্মকান্ডেও জড়িয়ে পড়ছে ওরা। সারাদেশেই এখন কিশোর গ্যাং কালচার ভয়ংকর আকার ধারণ করেছে। কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা নানান ধরনের সমাজবিরোধী কাজসহ মাদক চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং, মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে। এমনকি এক গ্যাং গ্রুপের সাথে অন্য গ্যাং গ্রুপের সঙ্গে তুচ্ছ বিরোধকে কেন্দ্র করে খুনখারাবির ঘটনাও ঘটে যাচ্ছে অহরহ। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো মাদক নেশার টাকা জোগাড়ে ছোটখাটো অপরাধে জড়ানো বিভিন্ন গ্যাংয়ের সদস্যরা বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়ে উঠছে নিজ নিজ এলাকার ভয়ংকর অপরাধী, এলাকার ত্রাস। এর পেছনের অন্যতম কারণ রাজনৈতিক ‘বড়ো ভাই’দের স্বার্থের প্রশ্রয়। এতে করে একসময় ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বড়ো শহরকেন্দ্রিক থাকলেও বর্তমানে গ্যাং কালচার সমস্যা ছড়িয়ে পড়েছে মফস্বল শহরগুলোতেও। পড়াশোনার পাঠ লাঠে উঠিয়ে এসব কিশোর স্কুল-কলেজের মোড়ে দলবেঁধে মেয়েদের ইভটিজিং চুরি, ছিনতাই এবং খুনের মতো অপরাধও করে থাকে নির্দ্বিধায়। কেবল শহর নয় গ্রাম-গঞ্জেও প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় বিভিন্ন সমাজবিরোধী কাজে এরা এতটাই বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে যে এদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণ করতে আইন শৃংখলা বাহিনীকেও হিমসিম খেতে হচ্ছে। সবার ধারণা সময় মতো এদের দমন করতে না পারলে এরাই একসময় বড়ো সন্ত্রাসী হয়ে ওঠতে পারে। যা দেশের নিরাপত্তার জন্য বড়ো ধরনের হুমকি হয়ে ওঠতে পারে বলে আইন-শৃংখলা বাহিনী ও দেশের নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এসব অপরাধ প্রবণতা বাড়ার মূল কারণ হলো, সমাজের অন্য সব অপরাধের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া। মানুষের মধ্যে মানবিক মূল্যবোধ কমে যাওয়া। মানবিক মূল্যবোধ হঠাৎ করে কমে গেছে বিষয়টা এমন নয়। প্রতিটি ঘটনা ঘটার পেছনে অনেক ছোট ছোট ঘটনা দীর্ঘসময় ধরে ঘটতে থাকে। একদিনে কিশোর অপরাধ বড়ো আকার ধারণ করেনি। যে সমাজে ধর্ষণের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় না, ইভটিজিংয়ের শাস্তি হয় না, মাদক সম্রাটরা রাজনৈতিক দলের ছত্রচ্ছায়ায় বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ায় সেই সমাজে অপরাধ বাড়বেই এইটা স্বাভাবিক।
বিশ্লেষকরা অনেকেই বলছেন, আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন, আকাশ সংস্কৃতি ও ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা বা তথ্যপ্রযুক্তি কিশোরদের অপরাধপ্রবণতা বাড়ার অন্যতম কারণ। তথ্য-প্রযুক্তির কারণে শিশু-কিশোরদের নৈতিক স্খলন হচ্ছে। শহরের শিশু-কিশোররা পরিবার থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন। এর ফলে তারা মাদকাসক্ত হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও রাজনৈতিকভাবে কিশোরদের ব্যবহার করার কারণেও তাদের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে। সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক, টিকটক এবং লাইকিতে বিভিন্ন ধরনের কিশোর গ্যাংয়ের পদচারণা এবং তাদের কর্মকাণ্ড সহজেই দৃশ্যমান হচ্ছে সমাজের প্রতিটি মানুষের নিকট।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিশোর হওয়ার কারণে দণ্ড বিধিতে পুলিশ এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারে না। বাংলাদেশের শিশু আইন-২০১৩ অনুযায়ী, ১৮ বছর বা এর কম বয়সী শিশু-কিশোরের বিরুদ্ধে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের জেলে নেওয়ার পরিবর্তে উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠাতে হবে, যাতে তারা সংশোধিত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে। তাই তাদের আটক করে শিশু-কিশোর সংশোধনাগারে পাঠাতে হয়। বয়সে কিশোর হওয়ার সুবাধে শাস্তির আওতায় আনতে আইনের যথেষ্ট ফাঁকফোকর থাকায় এর সুযোগ নিচ্ছে এসব গ্যাংয়ের লিডারসহ বাকি সদস্যরা। অনেক বড়ো বড়ো অপরাধ ঘটিয়েও বয়সের অজুহাতে সহজেই পাওয়া যাচ্ছে জামিনে বের হওয়ার সুযোগ। জামিনে বাইরে এসে এরা আবারও জড়িয়ে পড়ছে অপরাধে। অপরাধ সাম্রাজ্য নিজেদের দখলে রাখতে কিশোর গ্যাংয়ের দিকে ঝুঁকছে আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীরা। আর শীর্ষ সন্ত্রাসীদের আসকারা পেয়ে ‘কিশোর গ্যাং’ এখন বেপরোয়া। কোনোভাবেই তাদের লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক লোমহর্ষক খুনখারাবির ঘটনায় কিশোর গ্যাংয়ের জড়িত থাকার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে।
ঢাকার সব অলিগলিতেই কমবেশি কিশোর গ্যাং আছে তবে এদের পদচারণা সবচেয়ে বেশি নগরের বস্তিগুলোতে। পুলিশ মনে করছে এলাকায় প্রভাব বিস্তার, হুমকি-ধমকি দেয়া, মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ, কাউকে গুলি করে মেরে ফেলার জন্যই এলাকার প্রভাবশালীদের ছত্রচ্ছায়ায় কিশোর গ্যাং গড়ে তোলা হয়েছে। গোয়েন্দাদের মতে এসব কিশোর গ্যাং সদস্যদের কাছে পিস্তল রিভলবারের মতো মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্রও রয়েছে, ফলে আগ্নেয়াস্ত্রের জোরে এরা দিনকে দিন বেসামাল হয়ে পড়ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জিয়া রহমানের মতে পারিবারিক ও সামাজিক কারণ ছাড়াও শিক্ষাগত কিছু কারণও কিশোর গ্যাং কালচার গড়ে ওঠার জন্য দায়ী। পরিবর্তিত সমাজ ব্যবস্থায় নিম্ন আয়ের পরিবারের কিশোররা নানা কারণে শিক্ষা থেকে অনেক সময় বঞ্চিত হয়ে হতাশায় ভোগে। এসব কিশোরই এক সময় মাদকের দিকে ঝুঁকে পড়ে। পরে টাকার জন্য অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে।
অতিসম্প্রতি বাংলাদেশ প্রতিদিনে কিশোর গ্যাং নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেখানে গোয়েন্দাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে ‘কেবল রাজধানীতেই ৬০টি কিশোর গ্যাংয়ের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছে। এর মধ্যে সক্রিয় রয়েছে ৩৪টি গ্রুপ। মহল্লা-বস্তির ছিঁচকে সন্ত্রাসী থেকে ধনাঢ্য পরিবারের ধনীর দুলালদের সমন্বয়ে গড়া বেশ কিছু গ্যাংয়ের সদস্যদের কাছে এরই মধ্যে পৌঁছে গেছে দেশি-বিদেশি অস্ত্র। মাঝেমধ্যেই গ্যাংয়ের সদস্যরা নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে অন্য এলাকাতেও মহড়া দিচ্ছে বলে খবর রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। অথচ ঢাকার শিশু আদালতের বিচারিক কার্যক্রমের নথি অনুযায়ী গত ১৫ বছরে রাজধানীতে কিশোর গ্যাং কালচার ও সিনিয়র-জুনিয়র দ্বন্দ্বে ৮৮টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।’ বিভিন্ন পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে এসেছে যে, বিদেশ পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীরা নিজের অপরাধ সাম্রাজ্য যে কোনো মূল্যে ধরে রাখতে কিশোর গ্যাংয়ের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন।
শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, শিল্প ও প্রযুক্তি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্বসভ্যতা। আধুনিক সভ্যতার দৌড়ে হারিয়ে যাচ্ছে প্রচলিত নীতি, নৈতিকতা ও মূল্যবোধ। ক্রমশই বাড়ছে সামাজিক অবক্ষয়। নষ্ট হচ্ছে সামাজিক শৃঙ্খলা এবং ছিন্ন হচ্ছে সামাজিক সম্পর্ক। অস্থির হয়ে উঠছে সমগ্র সমাজব্যবস্থা। বর্তমানে চলছে নৈতিকতা ও মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়। এই প্রেক্ষাপটে পরিবার-সমাজ, অফিস-আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য ও চিন্তা-চেতনায় বিরাজ করছে চরম অস্থিরতা। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা ও বিশ্বাস প্রায় শূন্যের কোঠায়। পারিবারিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সমাজকে সক্রিয় হতে হবে। নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধে জাগ্রত করতে হবে সমাজকে। সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার জন্য প্রয়োজন সামাজিক স্থিতিশীলতা। প্রয়োজন নৈতিকতা, মূল্যবোধের চর্চা ও বিকাশ সাধন। নৈতিকতা ও মূল্যবোধের উপাদান তথা সততা, কর্তব্য, ধৈর্য, শিষ্টাচার, উদারতা, সৌজন্যবোধ, নিয়মানুবর্তিতা, দেশপ্রেম, কল্যাণবোধ, পারস্পরিক মমত্ববোধ, জবাবদিহিতা, সহমর্মিতা, আত্মত্যাগ ইত্যাদি মানবীয় গুণের চর্চা বর্তমান সমাজে নেই। সমাজ চলছে বিপরীত স্রোতধারায়। আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থার অবনতি বা সুবিচার না হওয়ার কারণে কিংবা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় অপরাধীরা দিন দিন যেন আরও সাহসী হয়ে ওঠছে। এটাও অপরাধ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এ ব্যাপারে পরিবারকে সচেতন থাকতে হবে বেশি, কেননা পরিবার মানুষের আদি সংগঠন এবং সমাজ জীবনের মূলভিত্তি। পরিবারের সাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিকেও নৈতিক ও মানবিক মূল্যবোধে কিশোরদের গড়ে তুলতে সচেষ্ট হতে হবে। শিশু কিশোরদের জন্য কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা এবং তাদের সংশোধনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার থাকতে হবে। সমাজবিজ্ঞানীরা বারবার বলছেন, আপনার সন্তান কী করছে? কার সঙ্গে মিশছে, তা জানা যেমন জরুরি, তেমনি জরুরি সন্তানকে সময় দেওয়া, তার সঙ্গে গল্প করা, তার মনের অবস্থা বোঝা, তার কাছে বাবা-মায়ের অবস্থান তুলে ধরা। আরও সহজভাবে বলতে গেলে, অভিভাবকদের সঙ্গে সন্তানের বন্ধন খুবই জরুরি। এই বন্ধন যত হালকা হবে, সন্তান তত বাইরের দিকে ছুটবে, বাইরের কলুষিত বিষবাষ্প গ্রহণ করবে। তখন আর তাকে ফেরানোর কোনো রাস্তা থাকবে না।
পরিশেষে বলতে চাই, এসব সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে একযোগে পরিবার, সমাজ তথা রাষ্ট্রকে যথার্থ ভূমিকা পাল করে যেতে হবে। তবে এ কথা সত্য কোনো সমাজ বা রাষ্ট্রই নৈতিকতা ও মূল্যাবোধের অবক্ষয় থেকে সম্পূর্ণভাবে বেরিয়ে আসা সম্ভব নয়। কেননা, সমাজ বা রাষ্ট্রে বিভিন্ন ও বিশ্বাসের লোক বাস করে, এদের একেক জনের চরিত্র অন্য জনের সাথে মিলে না। এ অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য তাই সর্বাগ্রে পরিবারকেই অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। কাজেই দেশকে সমূহ বিপদের হাত থেকে রক্ষা করতে এদের বিরুদ্ধে সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তোলা এখনই জরুরি। আর অভিভাবকদের উচিত হবে তাদের সন্তানদের বিষয়ে আরও সচেতন হওয়া।
মাহবুবুল আলম : কবি-কথাসাহিত্যিক, কলামিস্ট ও গবেষক।