শরীরে ইউরিক অ্যাসিড বিভিন্ন কারণে জমতে পারে। এক্ষেত্রে জয়েন্টের পাশাপাশি বিভিন্ন অঙ্গে এই অ্যাসিড জমে। অনেক ক্ষেত্রে কিডনি স্টোনের কারণ হতে পারে এই অ্যাসিড। তাই কিডনি স্টোনের লক্ষণ জেনে রাখা জরুরি।
ইউরিক অ্যাসিড একটি গুরুতর রোগ। এই রোগ থেকে শরীরে অনেক সমস্যাই দেখা গিতে পারে। তাই এই অসুখ নিয়ে সতর্ক করে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। আসলে ইউরিক অ্যাসিড শরীরে বাড়ে বিপাকজনিত কারণে।
ইউরিক অ্যাসিড শরীরে তৈরি হয়। আসলে এই অ্যাসিড তৈরি হওয়ার পিছনে রয়েছে পিউরিন। কিছু খাবারে এমনিই থাকে পিউরিন। এবার এই পিউরিন দেহে প্রবেশ করে প্রোটিনের মাধ্যমে। প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই অসুখ নিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞদের মতে প্রোটিন বিপাকের ফলে শরীরে তৈরি হয় এই অ্যাসিড।
এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট কিডনি বিশেষজ্ঞ ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, ইউরিক অ্যাসিড সকলের শরীরেই তৈরি হয়। তবে সেই অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে বেরিয়ে যায় কিডনির মাধ্যমে। তবে বহু ক্ষেত্রে এটা সম্ভব হয় না। তাই অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড শরীর থেকে বেরতে পারে না। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে তা বেশি পরিমাণে তৈরি হয়ে যায়। তাই এই বিষয়টি নিয়েও সতর্ক হয়ে যেতে হবে। ইউরিক অ্যাসিড কিডনি স্টোন হিসাবে জমে। আপনাকে মাথায় রাখতে হবে কিডনি স্টোনের লক্ষণ সম্পর্কে।
ডা. আনোয়ার হোসেন আরও জানিয়েছেন যে, এক্ষেত্রে মেয়েদের শরীরে ৬.৫-এর নীচে ও পুরুষের শরীরে ৭-এর নীচে ইউরিক অ্যাসিড থাকতে পারলে খুবই ভালো হয়। নইলে সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সতর্ক হয়ে যান।
ইউরিক অ্যাসিড কিডনি স্টোন কী?
ইউরিক অ্যাসিড কিডনি স্টোন এক গুরুতর রোগ। এই অসুখে আক্রান্ত হলে মানুষের বহু সমস্যাই দেখা দিতে পারে। এক্ষেত্রে প্রথমে বালির মতো করে স্টোন তৈরি হয়। তারপর তা আকারে বড়ো হতে থাকে। এবার ছোটো অবস্থায় নিজের থেকেই বেরিয়ে যেতে পারে এই কিডনি স্টোন।
কিডনি স্টোনের লক্ষণ?
ছোটো অবস্থায় স্টোন নিজের থেকে মূত্রনালী হয়ে বেরিয়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে মূত্রত্যাগ করার সময় ব্যথা হয়। তবে কিডনিতে স্টোন বড়ো হয়ে গেলে পিঠের দিকে ব্যথা হয়। এই ব্যথা হয় অসহ্য। আবার কিছু ক্ষেত্রে তলপেটের দিকে যন্ত্রণা হতে পারে। এছাড়া স্টোনের জন্য মূত্রের সঙ্গে রক্ত বের হতে পারে। এটাই হলো কিডনি স্টোনের লক্ষণ।
কিডনি স্টোন রোগ নির্ণয় কীভাবে?
এক্ষেত্রে প্রথমে করতে হয় ইউএসজি। এই টেস্টে করতে হয় কিডনি, ইউরেটাস ও ব্লাডারের। তবে বহু ক্ষেত্রে এই টেস্টের পরও বোঝা যায় না রোগ সম্পর্কে। তখন করতে হয় সিটি স্ক্যান। এর মাধ্যমে সবটা পরিষ্কার হয়ে যায়। তাই প্রতিটি মানুষকে এই বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে।
কিডনি স্টোনের চিকিৎসা কী?
স্টোন যদি ০.৭ সেমি আকারের ছোট হয় তবে ওষুধের মাধ্যমে বের করে দেওয়া যায়। এক্ষেত্রে ওষুধটি মূত্রনালী বড়ো করে দেয়। ফলে মূত্রত্যাগের সময় স্টোন বেরিয়ে যেতে পারে। এটাই হল মূল বিষয়। তবে স্টোনের আকার বড়ো হলে অপারেশন করা হয়ে থাকে। এটাই হল কিডনি স্টোনের চিকিৎসা।
কিডনি স্টোন থাকলে কী কী খাওয়া নিষেধ?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্টোন ফের হতে পারে। তাই এই মানুষগুলিকে প্রায় অনেকগুলো দিনে ইউরিক অ্যাসিড কমানোর ওষুধ খেতে হয়। এক্ষেত্রে মাথায় রাখার বিষয় হল, মদ্যপান, রেডমিট, সোয়াবিন, বেশি প্রোটিন জাতীয় খাদ্য খাওয়া যাবে না। তবেই ভালো থাকবেন আপনি। নইলে ফের কিডনি স্টোনের সমস্যায় পড়বেন।
ডা. আনোয়ার হোসেনর পরামর্শের ভিত্তিতে হেলথ ডেস্ক।