বিশ্বের ১১৯তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট চালু হয়েছে। সোয়া তিন হাজার কোটি টাকায় জার্মান কোম্পানি ভেরিডোস ই-পাসপোর্ট ও এ সংক্রান্ত অন্যান্য সরঞ্জাম সরবরাহ করছে। আসুন ই-পাসপোর্ট ও এর সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নেই।
এ বছরই দেশ জুড়ে
২০২০ সালের মধ্যেই সারাদেশে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এছাড়া প্রবাসীরাও পর্যায়ক্রমে ই-পাসপোর্ট পাবেন। পাশাপাশি মেশিন রিডেবল পাসপোর্টও কার্যকর থাকবে।
মেয়াদ
ই-পাসপোর্ট হবে পাঁচ ও ১০ বছর মেয়াদি। পাসপোর্টের আকারও হবে দুই ধরনেরÑ৪৮ পৃষ্ঠা ও ৬৪ পৃষ্ঠা। উভয় মেয়াদে উভয় ধরনের ই-পাসপোর্ট গ্রহণ করা যাবে।
৪৮ পৃষ্ঠার খরচ
৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ পাসপোর্টের (১৫ দিনের মধ্যে দেওয়া হবে) জন্য ফি লাগবে ৩৫০০ টাকা। সাতদিনের মধ্যে (জরুরি) পেতে ৫৫০০ এবং দুদিনে (অতি জরুরি) পাওয়ার জন্য খরচ ৭৫০০ টাকা। ১০ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্টের জন্য ৫ হাজার, জরুরি ৭ হাজার ও অতি জরুরির জন্য ৯ হাজার টাকা ফি ধরা হয়েছে।
৬৪ পৃষ্ঠার খরচ
৬৪ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি ই-পাসপোর্ট করতে লাগবে যথাক্রমে ৫৫০০ টাকা, সাত হাজার ৫০০ ও ১০ হাজার ৫০০ টাকা। আর ১০ বছর মেয়াদের জন্য লাগবে যথাক্রমে ৭ হাজার, ৯ হাজার ও ১২ হাজার টাকা।
প্রবাসীদের জন্য
বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট আবেদনে আলাদা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। ৪৮ পৃষ্ঠার পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১০০ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ১৫০। ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১২৫ ও জরুরি ফি ১৭৫ মার্কিন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬৪ পৃষ্ঠার ক্ষেত্রে পাঁচ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৫০ মার্কিন ডলার ও জরুরি ফি ২০০ এবং ১০ বছর মেয়াদি সাধারণ ফি ১৭৫ ও জরুরি ফি ২২৫ মার্কিন ডলার।
আবেদন প্রক্রিয়া
ই-পাসপোর্ট এর আবেদন অনলাইনে অথবা পিডিএফ ফরমেট ডাউনলোড করে পূরণ করা যাবে। এতে কোনো ছবির প্রয়োজন হবে না; কাগজপত্র সত্যায়নও করতে হবে না।
কোন কোন দেশে ই-পাসপোর্ট
বাংলাদেশের আগে আরো ১১৮টি দেশ ই-পাসপোর্ট চালু করেছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত সব দেশে ই-পাসপোর্ট ব্যবস্থা চালু আছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং মালদ্বীপেও ই-পাসপোর্ট আছে।
সুবিধা
ই-পাসপোর্ট নামে পরিচিত বায়োমেট্রিক পাসপোর্ট মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের মতোই, তবে এতে স্মার্ট কার্ড প্রযুক্তি ব্যবহার হয়। মাইক্রোপ্রসেসর চিপ এবং অ্যান্টেনার মাধ্যমে এ পাসপোর্টের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাসপোর্টের ডেটা পেইজ এবং চিপে সংরক্ষিত থাকবে। এক ব্যক্তির একাধিক পাসপোর্ট করার সুযোগ বন্ধ হওয়াসহ এই পাসপোর্ট নাগরিক ভোগান্তি কমাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অসুবিধা
ডেটা সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকার পরও ই-পাসপোর্টে প্রাইভেসি নিয়ে কিছু বিতর্ক হয়ে গেছে। পাসপোর্টের ডেটা তারবিহীন আরএফআইডি প্রযুক্তি ব্যবহার করে ট্রান্সফার করার কারণে তা বেহাত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। চিপে থাকা ব্যক্তিগত তথ্য আর পাসপোর্ট নাম্বার সঠিকভাবে এনক্রিপ্ট করে না রাখা হলে তা অপরাধীদের হাতেও চলে যেতে পারে। ফিচার ডেস্ক